বাংলার বিরোধী রাজনৈতিক দল মূলত বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম বারবার দাবি করেছে পুলিশ-প্রশাসনকে দলীয় সংগঠনে রূপান্তরিত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী সকলেই একবাক্যে পুলিশকে তৃণমূলের দলদাস বলে আক্রমণ করেছেন। ফলে বাংলার রাজনৈতিক মহলে কৌতুহল ছিল এবারের ভোটে সরকারি কর্মচারীদের ভোট কোন দিকে যায়। বিশেষ করে যারা ভোটের কাজে সরাসরি যুক্ত থাকবেন বা সরকারি কাজে ভিনরাজ্যে রয়েছেন তাঁরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমেই নিজের ভোটাধীকার প্রয়োগ করেন। ফলে পোস্টাল ব্যালটের ফলাফলের মাধ্যমেই বোঝা যায় সরকারি কর্মচারীদের মন কোন দিকে। আসুন দেখে নেওয়া যাক, চব্বিশের লোকসভায় পোস্টাল ব্যালটের হিসেব কি বলছে।
৪ জুন ভোট গণনা শুরু হতেই পোস্টাল ব্যালটের একটা প্রাথমিক হিসেব সামনে এসেছিল। আর গণনা শেষে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসেব মিলিয়ে চুরান্ত তথ্য সামনে এল। তাতে দেখা যাচ্ছে, পোস্টাল ব্যালটের প্রাপ্ত ভোটের নিরীখে বিজেপি এগিয়ে রানাঘাট, রায়গঞ্জ, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা উত্তর এবং দক্ষিণ, মেদিনীপুর, কৃষ্ণনগর, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার, বনগাঁ, বহরমপুর, আলিপুরদুয়ার, তমলুক, বালুরঘাটে। অপরদিকে বাকি আসনগুলিতে পোস্টাল ব্যালটে এগিয়ে তৃণমূল। এরমধ্যে পোস্টাল ব্যালটের নিরীখে ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বিজেপির থেকে তৃণমূলের ব্যবধান সাড়ে তিন হাজারের বেশি। অন্যদিকে দার্জিলিং আসনে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা পোস্টাল ব্যালটে প্রায় ২০০০ ভোট বেশি পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীর থেকে। ফলে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৬টি লোকসভা কেন্দ্রে পোস্টাল ব্যালটে এগিয়ে বিজেপি। আর তৃণমূল এগিয়ে ২৬ লোকসভা আসনে।
এই পরিসংখ্যান থেকে পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে, যে যে লোকসভা আসনে বিজেপির সংগঠন সামান্য হলেও শক্তিশালী, সেখানকার সরকারি কর্মচারীরাও ঝুঁকে রয়েছে পদ্ম শিবিরে। তবে পোস্টাল ব্যালটের হিসেব মিলিয়ে সার্বিক পরিসংখ্যান বলছে, বাংলার সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় অংশই শাসকদলের সঙ্গে রয়েছে। ৪২টি লোকসভা আসনের পোস্টাল ব্যালটের হিসেব বলছে, তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও ব্যবধান খুব অল্প। আবার ঘাটাল, তমলুক, বীরভূম, বর্ধমান-দূর্গাপুর, হাওড়া, ব্যারাকপুর, জঙ্গীপুর, কাঁথি, কৃষ্ণনগরে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে তুল্যমূল্য লড়াই হয়েছে।
Discussion about this post