৩১ মে ২০২২। দিনটি সকলের মনে আছে। ৩১মে রাতে হঠাৎ করেই প্রয়াত হন তারকা গায়ক কৃষ্ণ কুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। আচমকা ছন্দপতন হয়। কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে চির নিঃশ্বাস ত্যাগ করছিলেন গায়ক কৃষ্ণকুমার। সঙ্গীত জগতের মহান ক্ষতি হয়। যে ক্ষতি হয়তো আগামী ১ দশকে পূরণ করা সম্ভব হবেনা। ২০২২ সালের ৩১মে গায়কের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়েছিল গোটা দেশ। কলকাতার নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে এসে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাত ১০:৩০ নাগাদ যখন তিনি হোটেলে ফিরছিলেন তখন অত্যন্ত অসুস্থ বোধ করেন, সেই সময় শহরের একটি হাসপাতলে নিয়ে গেলে গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (কেকে) কে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গায়কের পরিবারের সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পরেছিল গোটা শহর সহ গোটা দেশ। ছোট থেকেই একটা নস্টালজিয়ার ছোঁয়া পাওয়া যায় তার দুর্ধর্ষ গান গুলির মাধ্যমে। কেকে-র জনপ্রিয় গান গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ‘কোই কাহে কেহতা রাহে’, ‘হামদাম সুনিয় রে’, ‘ দোলা রে দোলা’, ‘কেয়া মুঝে প্যার হ্যায়’ , ‘পিয়া আয়ে না ‘ , ‘ওম শান্তি ওম ‘ , প্রভৃতি।
গায়ক কেকে-কে শ্রেষ্ঠ প্লে ব্যাক গায়কদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তিনি ছিলেন একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ সিঙ্গার। হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কন্নর ভাষায় তার গান রেকর্ড করতেন। গায়ক কেকে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল গেয়ে। ১৯৯৯ সালের ফিল্ম ‘ হাম দিল দে চুকে সানাম’ – র ‘ তাদাপ তাদাপ কে’ গানটি তাকে সেরা পুরুষ প্লে ব্যাক গায়কের মনোনয়নের জন্য প্রথম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেছিলেন।
কেকে প্রায়ত হয়েছেন ২ বছর আগে ঠিক আজকের দিনটিতে। কিন্তু এখনও তার শিল্পসৃষ্টি তার অমর গীতি অনুরাগীদের মনে টাটকা। জীবৎকালে কিছু কিছু সময় তিনি সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। সেই সময় তার শিল্পীসত্তাতে বিভিন্ন কষ্ট সমাজ মাধ্যমে দেখা গিয়েছিল ।
দুবাইয়ের একটি অনুষ্ঠানের ইন্টারভিউর মাধ্যমে জানতে পারা গিয়েছিল, পেশায় চিকিৎসক হওয়ার উদ্দেশ্যে গায়ক kk এগোচ্ছিলেন। কিন্তু তারপর তিনি গান টাকেই বেছে নেন। গান ছিল তার জীবনের ধ্যান জ্ঞান। তিনি আরো জানিয়েছিলেন, ডাক্তারি করেছেন তিনি গানের মাধ্যমে। গানের মাধ্যমে অনেক মানুষের মন ভালো করেছেন তিনি। তারা ওনার গানের মাধ্যমেই জীবনে বাঁচার আশা দেখেছেন।
দুবাইয়ের একটি অনুষ্ঠানের ইন্টারভিউর মাধ্যমে জানতে পারা গিয়েছিল, পেশায় চিকিৎসক হওয়ার উদ্দেশ্যে গায়ক kk এগোচ্ছিলেন। কিন্তু তারপর তিনি গান টাকেই বেছে নেন। গান ছিল তার জীবনের ধ্যান জ্ঞান । তিনি আরো জানান ডাক্তারি করেছেন তিনি গানের মাধ্যমে। গানের মাধ্যমে অনেক মানুষের মন ভালো করেছেন তিনি। তারা ওনার গানের মাধ্যমেই জীবনে বাঁচার আশা দেখেছেন।
তিনি তার ‘তড়প তড়প’ গানের উদ্দেশ্যে বলেন যে এই গানটি যখন তিনি গেয়েছিলেন, তখন কানের মধ্যে তাকে ততটাই কষ্ট, বেদনা যুক্ত করতে হয়েছে। কিন্তু তার যে মন ভেঙেছে বলে তিনি এই গানটি গেয়েছিলেন তেমন টা নয়। কারণ চিরকাল তিনি তার স্ত্রীকেই ভালোবাসে এসেছেন, ১১ বছর বয়েস থেকে একসঙ্গে বড়ো হয়েছেন । এবং বড়ো হয়ে বিয়ে করেছেন । যার ফলে ওনার হৃদয়ে কোনো যন্ত্রণা ছিলনা। কিন্তু তিনি জানান, সমস্ত আবেগ আমাদের কে চিরকাল ঘিরে রাখে। তাই শিল্পীকে চিরকালই গান নিতে বসতে হয় গানের সাথে তাকে একই রকম আবেগ, অনুভূতি, বেদনা মেশাতে হয়। অন্যের জীবনের কষ্টকে গানের মাধ্যমে প্রকাশ করেন তিনি। আর এটাই হলো শিল্পীর আসল পরিচয়। তিনি আরো বলেন , একদম ফ্ল্যাট গাওয়া যায়না, সেই আবেগটা গানের মধ্যে থাকতে হয়।
ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম বহুমুখি গায়ক ছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর মাত্র ৫৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। কেকের গান, তার সাক্ষাৎ কার, তার অনবদ্য সৃষ্টি আমাদের কাছে আজও অবিস্মরণীয়। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে রইল শ্রদ্ধা।
.
Discussion about this post