বিখ্যাত কপিল শর্মার শোয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে ঠাট্টা। কবিগুরুর ‘একলা চলো রে’ গানটির কথা ব্যঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গিতে প্রদর্শনের জন্য বেজায় ক্ষুব্ধ শ্রীজাত। সোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানেই সাফ হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন যে, “কপিলের শোয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করব, দিন সাতেক সময় দিলাম। ক্ষমা না চাইতে হবে তাঁদের । ইতিমধ্যেই বিশিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়েছে।”
হাস্যরসের খোরাক করতে গিয়ে রীতিমতো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে করা হল মশকরা! আর যে ঠাট্টা-রসিকতায় মেতে ওঠেন শোয়ের সঞ্চালক তো বটেই এমনকী উপস্থিত তারকারাও। সেই প্রেক্ষিতেই কপিল শর্মার শোয়ের বিরুদ্ধে এবার আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিলেন শ্রীজাত।
কপিল শর্মা শো’ দর্শক মহলে বেজায় জনপ্রিয়। হাস্য কৌতূকে ভরা কন্টেন্ট আর কমেডিয়ান কপিল শর্মার সঞ্চালনা দেখে অনুরাগীরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সেই শোয়েই রবি ঠাকুরকে অপমান! এর প্রেক্ষিতে ফেসবুক পোস্টে ঠিক কী লিখেছেন শ্রীজাত? তাঁর কথায়, “দিনপাঁচেক আগে নেটফ্লিক্সে ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’-এর একটি নতুন পর্ব সংযোজিত হয়, যেখানে অতিথিদের মধ্যে অভিনেত্রী কাজল ও কৃতী স্যানন উপস্থিত ছিলেন। সেই পর্বের মাঝামাঝি সময়ে কপিলের এক সহকারী শিল্পী বা কৌতুকাভিনেতা ক্রুষ্ণা অভিষেক উপস্থিত হন এবং সম্ভবত কাজলকে বাঙালি বংশোদ্ভুত হিসেবে পেয়েই রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মশকরার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেন। ‘একলা চলো রে’ গানটি নিয়ে ক্রুষ্ণা অভিষেক যে ব্যাঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার উদ্রেক করেছেন, তা সম্মান ও শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে বহুদূর চলে গেছে, অন্তত শ্রীজাত এর চোখে।
শ্রীজাতর সংযোজন, “কৌতুক আর তামাশা’র মধ্যে একটা সূক্ষ্ম রেখা আছে, সেটা ঝাপসা হলেই তা বিপদ বাড়ায়। কী বলছি, কাকে নিয়ে বলছি, কতটুকু বলছি, এসব না-ভেবে কেবল লোক-হাসানো TRP-র জন্য নিবেদিতপ্রাণ হতে হতে মানুষ এক সময়ে নিজের সীমা বিস্মৃত হয়। তখন তাকে মনে করিয়ে দিতে হয়, এই চৌকাঠ পেরনো তোমার উচিত হয়নি। আমি সেটুকুই করছি। বাঙালি মনীষীদের নাম বা কাজ নিয়ে ইচ্ছেমতো হাসিঠাট্টা করাই যায়, ভারতের অন্যান্য অংশের কিছু বাসিন্দাদের এমনটাই ধারণা। বাংলা ভাষা থেকে সংস্কৃতি, সবটাই তাঁদের ঠাট্টা তামাশার মধ্যে পরে। তারা ভাবেন বাঙালি এসব ঠাট্টায় অভ্যস্ত, অতএব বাঙালিকে নিয়ে মস্করা করাই যায়, তাও আবার একজন বাঙালি অভিনেত্রীর সামনে, যিনি এই কৌতূকে হেসে গড়িয়ে পড়ছেন। আমার এহেন লেখায় যদি কারও মনে হয় আমি ভুল কিছু বলছি তাহলে কিছু করার নেই।
ওই পোস্টেই শ্রীজাতর হুঁশিয়ারি, “‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’এর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিও জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে উল্লিখিত পর্বের ওই অংশটি পুনর্সম্পাদনা করবার দাবিও থাকল। ছেড়ে দিলে দেওয়াই যায়, কিন্তু কতদিন এবং কতদূর ছাড়ব, সেটা ভাবা দরকার। আমি সাতদিন সময়সীমা বেঁধে দিলাম। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজীবির সঙ্গে পরামর্শ করেই এটি সমাজ মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনছি, এটাও জানিয়ে গেলাম। আজ থেকে এক সপ্তাহ, অর্থাৎ ৭ নভেম্বর, ২০২৪-এর মধ্যে আমার দাবিগুলি গৃহীত, বিবেচিত এবং পূর্ণ না-হলে আমি আইনি পদক্ষেপ অনুসরণ করবো।”
Discussion about this post