একসময়ের বন্ধু প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক মাস ধরে ফুঁসতে থাকা উত্তেজনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। বাংলাদেশে একজন হিন্দু পুরোহিতকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর দুই প্রতিবেশী পরস্পরের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ তুলেছে। গত আগস্টে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিত্র শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে পালিয়ে যান। ভারতে তাঁর অব্যাহত উপস্থিতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও মোদি সরকারের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি করেছে।৮৪ বছর বয়সী নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, হাসিনা ভারতে বসে ক্ষমতায় ফিরে আসার ষড়যন্ত্র করছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতারা ভারতের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও তুলেছেন, রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণকে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরছে ভারত। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে আমেরিকা। পদ্মাপারের পরিস্থিতি নিয়ে যোগাযোগ রাখছে ভারত-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ে প্রকাশ, বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ কথা জানিয়েছেন আমেরিকার বিদেশ দফতরের সহকারী মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগের আঁচ পড়েছে আমেরিকাতেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমেরিকা যাতে পদক্ষেপ করে, সে বিষয়ে একটি সংগঠনের তরফে আর্জি গিয়েছে হোয়াইট হাউসে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কেন চুপ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল ওই সংগঠন। এ সবের মধ্যেই আমেরিকার এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। মার্কিন কমিশনের বক্তব্য হল, যত দিন যাচ্ছে, ভারতে আমজনতার ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন সরকারের সংশ্লিষ্ট কমিশনের রিপোর্টে, স্বাধীনভাবে ধর্মাচারণের প্রশ্নে ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের রাষ্ট্র’ হিসাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। এই কমিশনের পক্ষ থেকে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি লিখেছেন, বরিষ্ঠ নীতি বিশ্লেষক সীমা হাসান। সেই রিপোর্টে ভারত বিষয়ক অধ্যায়ে যে কথা বলা হয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাতে লেখা হয়েছে, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নাগরিকদের উপর এবং তাঁদের উপাসনাস্থলগুলিতে হিংসাত্মক হামলা চালানো হচ্ছে। এমনকী, সেই হিংসায় অনেক সময় সরকারি আধিকারিকরাই মদত দিচ্ছেন। ওই সরকারি আধিকারিকরা ঘৃণা ভাষণ করছেন। সেইসঙ্গে, বহু ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের তরফ থেকে এই রিপোর্ট সামনে আসায় স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের সম্পর্কের উপর এর কী প্রভাব পড়তে চলেছে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তিন দফায় বাংলাদেশের ১৬৭ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। আমেরকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বেদান্ত পটেল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা চাই সব সাংবাদিকের স্বাধীনতা ও অধিকারকে যথাযথভাবে সম্মান দেখানো হোক।’’ জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাট সরকারের আমলে শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলকে স্বাগত জানিয়েছিল ওভাল অফিস। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারপর্বেই বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ইউনূস সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্প। এছাড়াও বাংলাদেশের ধরপাকড়-হামলার প্রসঙ্গ তুলে আমেরিকার মন্তব্য ‘‘আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং ভিন্নমত পোষণ করতে পারার অধিকারকে সমর্থন করি। আমেরিকা মনে করে, কোনও গণতন্ত্রিক পরিবেশের জন্য এগুলি অপরিহার্য।’’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে একাধিক ইসলামপন্থী সংগঠন। এমনকি ইসকনকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বাংলাদেশের হাইকোর্টেও আবেদন জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামানও ইসকনকে ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলে উল্লেখ করেছেন। এই পরিস্থিতিতেই এবার বাংলাদেশে ইসকনের একটি সেন্টার জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অফিসের সামনে থেকে ইসকন প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদের ছবি সহ বোর্ডটি নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে থাকা ভক্তদের নাকি সেনার গাড়িতে করে সেখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। ইসকন সূত্রের খবর, ঢাকার মাদারিহাট জেলার শিবচর উপজেলায় ইসকনের একটি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই অফিস শিবচরের টিএনটি মোড় এলাকায় অবস্থিত। অভিযোগ, সেখান থেকে ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদের ছবি সহ বোর্ডটি নামিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে রাধারমণ দাস লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের শিবচরের ইসকন নামহাট্টা সেন্টারটি মুসলিমরা এসে জোর করে বন্ধ করে দিয়ে যায়।’ বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এই দাবি নিয়ে মামলা করা হয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্টে।
দেশে এবং বিদেশে বিরাট রোহিতরা টেস্ট সিরিজে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই, ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বার বার বলে আসছিলেন যে, এই...
Read more
Discussion about this post