সংখ্যালঘু নেতা তথা সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে বাংলাদেশের একাংশ উত্তাল। সেই আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কিন্তু কী নিয়ে এত হইচই? কেন গ্রেফতার হলেন চিন্ময়কৃষ্ণ? গত কয়েক দিনে ঘটনাপ্রবাহও বা কোন দিকে গড়াল?চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় জন্ম চিন্ময়কৃষ্ণের। ছোট থেকেই তিনি সুবক্তা হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। পরে বাংলাদেশের ইসকনের সঙ্গে যুক্ত হন।বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবিতে কথা বলতেন তিনি। তাঁদের উপরে অত্যাচারের বিরুদ্ধে চিন্ময়কৃষ্ণ সরব হয়েছেন বার বার। গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তার পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। একাধিক হিন্দু মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে চট্টগ্রাম এবং রংপুরে। চট্টগ্রামে শুক্রবারও নতুন করে তিনটি মন্দিরে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবিতে চিন্ময়ের প্রচার এবং কর্মসূচি বেড়ে গিয়েছিল। অক্টোবরে চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের নিয়ে তেমনই একটি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন চিন্ময়। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি জারি করেছে। অপরদিকে বিজেপির নেতারা বাংলাদেশ সরকারকে হুঁশিয়রি দিয়ে চলেছেন। শুভেন্দু অধিকারী পেট্রপোল সীমান্ত অবরোধের হুমকি দিয়েছেন। এই আবহে এবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই নিয়ে অভিষেক আজ সংসদ চত্বরে বলেন, ‘অন্য দেশের বিষয়ে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক না। তবে যে ঘটনাটা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভগ্যজনক।’ সেই ভিডিয়ো ক্লিপিং আবার তৃণমূল কংগ্রেস তাদের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে পরে তা ডিলিটও করে দেয়। সেই পোস্টে তৃণমূল লিখেছিল, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন।’ এর আগে ভারতীয় মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও জামিন নাকচ করার বিষয়টি আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি। বিগত দিনে বাংলাদেশের চরমপন্থীরা হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে গিয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি চুরি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও বিভিন্ন মন্দিরকে অপবিত্র করার একাধিক অভিযোগও উঠেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে যখন এই ঘটনার অপরাধীরা মুক্ত রয়ে গিয়েছে। তবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবি উপস্থাপনকারী একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা শ্রী দাসের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়টিও উদ্বেগের সাথে নোট করছি।’ ঠিক এমনই এক মুহূর্তে শান্তি ফেরাতে, বাংলাদেশকে একটি মডেলের প্রস্তাব দিলেন সেদেশের প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামিম কামাল। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামিম কামাল বলেন, মূলত সরকারের পতনের পর, বাংলাদেশের নিরাপত্তার পরিকাঠামোটা ভেঙে পড়েছে। প্রায় ৫৬টি থানা লুঠ হয়েছে। প্রায় ৫০টি থানায় অগ্নিসংযোগ হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার ৭৮৯টি অস্ত্র খোয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে পুলিশ তারপরে যে অবস্থায় রয়েছে, তা অত্যন্ত নাজুক বা প্যারানয়েড অবস্থা। পুলিশের পক্ষে এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এখানে যেটা বিষয় আসার ছিল, গত আড়াই মাস ধরে সেনা বাহিনী ময়দানে রয়েছে। তবে সেনা বাহিনী পূর্বের মতোই সক্রিয় রয়েছে। এখন যেহেতু এটা বিশেষ পরিস্থিতি, তাই এটাকে খুবই ডায়নামিকভাবে মোতায়েন করা উচিত। একটা মডেল বলছি যে, যদি বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলায় একটা করে সেনাবাহিনীর ইউনিকে নিযুক্ত করা যায় এবং প্রত্যেকটা থানা বা উপজেলায় একটা করে ডিটাচমেন্ট দেওয়া যায়, সর্বক্ষেত্রে নজরে রাখবে, কোথায় মামলা হচ্ছে, কোথায় চাঁদাবাজি হচ্ছে, কোথায় সন্ত্রাস হচ্ছে, ইত্যাদি ইত্যাদি।এমন কি এটা যদি করা যায়, তাহলে ১৫ দিনের মধ্যেই আইন শৃঙ্খলার একটা বড় পরিবর্তন আসবে। বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পর রাজনৈতিক দলগুলির আচরণ প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘আমরা যেটা দেখতে পাচ্ছি, এই অগাস্ট বিপ্লবের পরে, কোনও কোনও রাজনৈতিক দল পরিস্থিতির ফায়দা নিচ্ছে। মামলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখিয়ে, তারা মানুষকে হয়রানি করছে। কোনও কোনও রাজনৈতিক দল এটাকে আবার অত্যন্ত ভাবে কাজে লাগাচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, পুলিশের পাশপাশি হামলাকারীদের আটকাতে ব্যর্থ বাংলাদেশের সেনা। দোয়ারা বাজার এলাকাতেও হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা হয়। একাধিক দোকানে ভাঙচুর ও ব্যাপক লুঠপাট চলে। দোয়ারা থানা ঘেরাও করে হামলাকারীরা। আকাশ দাস নামে এক হিন্দু যুবককে খুঁজছে মুসলমানদের একাংশ। প্রকাশ্যে তাঁর নাম করে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশে সেনা নামানো হলেও আক্রমণ রুখতে ব্যর্থ তারা।
মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ জঙ্গিহানা হয়। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পর্যটক।...
Read more
Discussion about this post