শেখ হাসিনার জমানা শেষ হতেই ঢাকার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্রিয় হল ইসলামাবাদ। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর থেকে বাংলাদেশে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে, যেগুলি ভারতের কাছে ভাল ঠেকছে না। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চাইছে। গত সপ্তাহে পাকিস্তান থেকে একটি কার্গো জাহাজ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এটি ছিল বিগত ৪ দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সামুদ্রিক যোগাযোগ। করাচি থেকে জাহাজটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি সমুদ্র বাণিজ্যের এক ঐতিহাসিক পটভূমির সূচনা করে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বর্তমানে মুজিব কন্যা বাংলাদেশে নেই। এই পরিস্থিতিতে পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মহম্মদ ইউনূসের বার্তালাপ যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। সম্প্রতি, শাহবাজ শরিফ এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছি ৩০ অগস্ট সকালে। তাঁকে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছি।’ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার উপর জোর দিয়েছেন দুই জনেই, সূত্রের খবর এমনটাই। বাংলাদেশে পাকিস্তানের দূতাবাসেরও বেশ তৎপরতা দেখা গেছে। আর এতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। বিশ্লেষকদের মতে, দুদেশের সম্পর্ক মজবুত হলে পাক মদতে বাংলাদেশে মাথাচারা দিয়ে উঠবে জঙ্গি সংগঠনগুলো। যার ফলে অসম, মণিপুরের মতো রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার দেখা করেছেন বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে। দেখা করেছেন বিএনপির নেতাদের সাথেও। বাংলাদেশে পাকিস্তান থেকে সরাসরি কার্গো জাহাজের আসা ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিকেই চিহ্নিত করে। শেখ হাসিনার শাসনকালে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের এক নতুন দিকের সূচনা হয়। এখন হাসিনা ক্ষমতা থেকে সরে এসে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করে বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে। সরাসরি শিপিং রুট ছাড়াও দুই দেশের একে অপরের কাছাকাছি আসার আরও একাধিক ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করেন শাহবাজ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ নিবিড় বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউনূসের কাছে।প্রসঙ্গত, গত ৫ অগস্ট জনবিক্ষোভের জেরে আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা এবং দেশত্যাগের পরেই বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলকে স্বাগত জানিয়েছিল পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। পাক মিডিয়ার বড় অংশ দাবি করেছিল, হাসিনার পতনের ফলে বাংলাদেশকে নিয়ে বিপাকে পড়বে ভারত। কয়েকদিন আগেই ইসলামাবাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন খালেদা জিয়ার দল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হাসিনার অনুপস্থিতিতে বিএনপি-জামাতের মতো দলের সঙ্গে ‘জোট’ আরও মজবুত করে ঢাকায় প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে পাকিস্তান। যাতে ভারতের উপরেও চাপ বৃদ্ধি করা যায়। এখন তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতেও উদ্যোগী হয়েছে। যাতে ভারত সম্পর্কে এই সরকারের কী মনোভাব তা জানা যায়। আর এই গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে দিল্লি।
বাংলাদেশের পলাতক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে মেজর সুমন আহমেদ এর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ভারত কি বাংলাদেশ...
Read more
Discussion about this post