দিন কয়েক আগেই ‘চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল’ করার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্মীরা। তারপরেই দিল্লি দখল করার ডাক দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ইসলামী বক্তা মুফতি কাজী ইব্রাহিম। এ বার ভারতে পরমাণু বোমা ফেলার হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা আধিকারিক। ভারতের উপর পরামাণু বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান তথা অবসর প্রাপ্ত কর্ণেল অলি আহমেদ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন অলি আহমেদ। ওই যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর বিক্রম’খেতাবও দিয়েছিল। সেই তিনিই এখন পাকিস্তানকে ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করার পাশাপাশি ভারতকে হুমকি দিয়েছেন। বিজয় দিবসের সভায় শেখ হাসিনাকে আক্রমণ করার পাশাপাশি ভারতকেও নিশানা করেন অলি। সেই সভাতেই বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা আধিকারিক ভারতের বিরুদ্ধে সরাসরি পরমাণু বোমা ব্যবহার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বাংলাদেশের অনেক ‘বন্ধুর’ হাতে নিউক্লিয়ার বম্ব আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ‘ধার’ নিয়ে এসে তা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অলি আহমেদ। অগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে আওয়ামি লিগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ‘আশ্রয়’ নিয়েছেন ভারতে। ওই সভায় হাসিনার সঙ্গে ভারতকেও আক্রমণ করেন অলি আহমেদ। তাঁর দাবি, গত ১৫ বছর ধরে ভারত বাংলাদেশকে ‘গাভী’ হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেখানে গিয়েই আশ্রয় নিয়েছেন হাসিনা। তারপরেই ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে অ্যাটম বোমা, নিউক্লিয়ার যুদ্ধের ভয় দেখাবেন না। আমাদেরও অনেক বন্ধু রাষ্ট্র আছে যাদের কাছে নিউক্লিয়ার বম্ব আছে এবং তারা দিতে রাজি আছে। আপনি ব্যবহার করবেন আর আমরা এখানে কলা চুষব, এটা হবে না। এখান থেকেও নিউক্লিয়ার বম্ব লঞ্চ করা হবে।’ এরই সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করেন লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ‘পাঙ্গা’ নিলে তার ফল খুব খারাপ বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিধর দেশ নয়। চিন পাকিস্তানের কাছে এই বোম থাকলেও তা ব্যবহারে অনেক আন্তর্জাতিক বিধি নিষেধ আছে। অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তিও রয়েছে এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। সেই চুক্তিতে পাকিস্তান-চিনের মতো রাষ্ট্র সই করেছে। ফলে যেভাবে উঠতে বসতে বাংলাদেশের বিভিন্ন নেতা, প্রাক্তন সেনাকর্তারা ভারতকে হুমকি দিচ্ছেন তা কার্যত ফাঁকা কলসির আওয়াজ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আলি আহমেদের এই হুমকিকে তীব্র কটাক্ষে ফিরিয়ে দিয়েছেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। মোদিকে উদ্দেশ্য করে অলি আহমেদ বলেছিলেন ‘মোদী সাহেব, আল্লাহকে ভয় করুন’ আর সেই ভিডিও শেয়ার করে এক্স হ্যান্ডলে তথাগত রায় লিখেছেন, ‘মোদী সাহেব আল্লাহকে ভয় করেন না, কারণ তিনি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন না। এই অলি কি বিশ্বাস করে যে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো ভিক্ষুক রাষ্ট্র বাংলাদেশিদের খুশি করার জন্য মাথা ঝুঁকিয়ে রেখেছে?’ এখন প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশ কি আদৌ পারে পরমাণু ব্যবহারে? একাধিক আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি রয়েছে। যার অধীনে পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন, পরীক্ষা এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ। চিন, পাকিস্তান,ভারতের মতো দেশগুলির এই চুক্তিতে স্বাক্ষর রয়েছে। তবে বাংলাদেশ কিন্তু পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র নয়। তবে কি এবার পাকিস্তানের সাহায্য় নিয়ে গোপনে অস্ত্র ভাণ্ডার তৈরি করছে বাংলাদেশ? প্রাক্তন কর্নেলের হুমকি কিন্তু সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে।
Discussion about this post