গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে নির্দেশনা জারি করে এনবিআরের কাস্টমস উইং জানিয়েছে ভারত নেপাল ও ভুটান থেকে মোট ৩৫টি পণ্যর আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল বাংলাদেশ। আত্মনির্ভর দেশ গড়ে তোলার প্রস্তুতিতেই এই পদক্ষেপ বাংলাদেশ সরকারের। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এটি একটি অন্যতম কৌশল হিসেবে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।
গত ১৩ এপ্রিল এই নির্দেশনা জারি করে, এনবিআরের কাস্টমস উইং ১৫ এপ্রিল এ তথ্য জানায় কারণ, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন বাণিজ্যিক যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
ভারতের ট্রানশিপমেন্ট বাতিল পদক্ষেপের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারতসহ নেপাল ও ভুটানের যে ৩৫ টি পণ্য ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলির মধ্যে রয়েছে কাগজপত্র দ্রব্য, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল দ্রব্য, গৃহস্থলী পণ্য, এবং নির্মাণ সামগ্রী।
পন্য গুলি হল,ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়ো দুধ, টোব্যাকো, রেডিও ও টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স। তামাকজাত দ্রব্য কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিন্তু মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে উল্লেখ হয়েছে।
এই পদক্ষেপ এর মাধ্যমে বিশেষ করে কাগজ,সিরামিক ও টেক্সটাইল পণ্য খাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি করাই মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের। তবে কিছু ব্যবসায়ী মহল থেকে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করা হচ্ছে। তারা বলছেন, বিকল্প উৎস থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বাড়বে, যা শেষ পর্যন্ত উপভোক্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
কাস্টমস সূত্রে খবর, স্থানীয় শিল্প গুলিকে সুরক্ষা প্রদান করতে এবং বেআইনিভাবে রি-এক্সপোর্ট বন্ধ করতেই বাংলাদেশের তরফে ভারত-নেপাল ভুটানের এই পণ্য গুলির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৮ই এপ্রিলের পর থেকে ভারতের থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তবে নেপাল-ভুটানে স্থলপথে ট্রানজিট নিয়ে পণ্য পাঠানোয় এই বাতিলের কোন প্রভাব পড়েনি। এরপরই বাংলাদেশের এই তিন দেশের আমদানি পন্যের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে পাল্টা বাণিজ্যিক কৌশল বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।
Discussion about this post