বাংলাদেশের পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক বেশি খারাপ হয়েছে। জিডিপির বৃদ্ধির পরিমাণ কমে গিয়েছে। কাজেই কোনও ভাবেই আইএমএফের থেকে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। কিছুদিন আগেই আইএমএফের কর্তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন। মোহম্মদ ইউনূসের প্রশংসাও করেছিলেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে তারা দেশে ফিরে গেলেন। অর্থাৎ মাত্র ১.৩ বিলিয়ন ডলারের জন্য আইএমএফের কাছে বারবার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ঋণ দিতে তারা যে অপারগ, সেটা তারা জানিয়ে দিয়েছেন। পরে পরিস্থিতি বুঝে ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল একবার আমেরিকাতে আলোচনায় বসবেন। সেই আলোচনায় যদি মনে হয় তবে তারা ঋণ দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইএমএফের কাছে ঋণ নিয়েছিলেন। তবে সেই সময় বাংলাদেশ রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য নানা দিক থেকে সংকটে পড়েন। আর ঠিক সেই সময়, ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেন। তারা কিস্তি মারফত এই ঋণ দেয়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন কখনই বনদেশের ঋণ পেতে সমস্যায় পড়তে হয়নি। কিন্তু ইউনূস ক্ষমতায় বসতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ তিন চাইতেই আইএমএফ কর্তারা বাংলাদেশ সফর করে যান। শুধু তাই নয়, ফেরার আগে স্পষ্ট করে দেন, কেন তারা ঋণ দিতে অপারগ। তারা কারণ হিসাবে চারটি পয়েন্টকে তারা তুলে ধরছেন। যেমন রাজস্ব আয়ের তেমন ইতিবাচকভাবে বৃদ্ধি না হওয়া, বিনিময় হার বাজারভিত্তিক না হওয়া, ভর্তুকি না কমে যাওয়া এবং ব্যাঙ্ক খাতের তেমন উন্নতি না হওয়া। জিডিপির ৫.১ পাসেন্ট থেকে ৩.৩ পার্সেন্ট হয়ে গেলো। তাও মাত্র কয়েক মাসে! যেটা প্রায় নজীর করে তুলেছে বাংলাদেশ।
এক ব্রিফিংয়ে আইএমএফের গবেষণা বিভাগের উন্নয়ন সামষ্টি অর্থনীতি শাখার প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও-সহ ৯ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংয়ের আগে মিশনটি ৬ এপ্রিল থেকে গত বুধবার পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে বৈঠক করে। বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে সাহায্য করতে চায় বলে মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বৈঠকে এই বিষয়ে আরও আলোচনা হবে। এ বৈঠক হবে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলতি অর্থবছরের প্রথমা দিকে মোট দেশজ উৎপাদনের বৃদ্ধি কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। অর্থাৎ আইএমএফের এই বক্তব্য ক্রমশ ভয় ধরাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এখন দেখার, এরপর টনক নড়ে কিনা মোহাম্মদ ইউনূসের।
Discussion about this post