প্রার্থী হিরণ চ্যাটার্জির গাড়ি আটকে কেশপুরে বিক্ষোভ। কেশপুরের খেড়িয়াবালি এলাকার ঘটনা। বাঁশ, লাঠি হাতে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় বিজেপি প্রার্থী হিরন এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।
ষষ্ট দফায় ভোট বাংলার ৮ টি আসনে। যার মধ্যে রয়েছে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে আবার তারকা ফাইট। দেব vs হিরণ। সকাল থেকে ভোট ময়দানে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কেশপুর। বলাবাহুল্য কেশপুর তার রাজনৈতিক সংঘর্ষের ট্রাডিশন ধরে রাখল ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও। কেশপুরের খেড়িয়াবালিতে প্রার্থী হিরণ চ্যাটার্জির গাড়ি ঘিরে শুরু হল বিক্ষোভ। বাঁশ, লাঠি হাতে কেন্দ্রীয়বাহিনী ও পুলিশের সামনে দণ্ডায়মান উত্তেজিত জনতা। বিক্ষোভকারীদের দাবি বিজেপি প্রার্থী হিরণ এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে এসেছেন। শুক্রবার রাতেও বিজেপি কর্মীদের পাঠিয়ে গ্রামবাসীদের উপর হামলা করিয়েছেন। প্রার্থীকে আটকাতে মাঝ রাস্তায় বসে পড়লেন গ্রামবাসীরা।
প্রায় ঘণ্টাখানেক আটকে থাকে প্রার্থী হিরণের কনভয়। বিজেপি প্রার্থী হিরণের দাবি কেশপুরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়েছে। গ্রামবাসীরা নয়, তৃণমূলের হার্মাদবাহিনী তাঁর রাস্তা আটকেছে। এদিকে হিরণের দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী দেব। তাঁর দাবি চারিদিকে সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। বরং বিজেপির প্রার্থী জায়গায় জায়গায় গিয়ে উস্কানি দিচ্ছেন।
কেশপুরে রাজনৈতিক সংঘর্ষ নতুন কিছু নয়। লোকসভা ভোট হোক বা বিধানসভা। কেশপুরকে বার বার সংঘর্ষে জড়াতে দেখা গিয়েছে। বাম আমল থেকে কেশপুরের পুনরাবৃত্তি দেখে আসছে রাজ্যের মানুষ। তাই প্রতিবার ভোটের দিন কেশপুরের দিকে থাকে বাড়তি নজর। রাজনীতির হানাহানি, সন্ত্রাস, বাম আমল থেকেই। গ্রাম দখলের সংঘর্ষ, সশস্ত্র দুস্কৃতীর দাপট ৷বুথে না যাওয়ার হুমকি, ছাপ্পা ভোট, এইসব কেশপুরের মজ্জায় মজ্জায় ৷ একসময় বলা হোত কেশপুরে গাছের পাতা নড়ার উপায় নেই বাম নেতৃত্বের ইশারা ছাড়া। সময় বদলেছে কেশপুর এখন তৃণমূলের কব্জায়। তবে পরিস্থিতির কোন হেরফের হয়নি। ২০০৯ সালে লোকসভা কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয় সিপিআই-এর বর্ষীয়ান নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত। তিনি ৫৩.৫ শতাংশ ভোট পান। ২০১৪ সালে ঘাটাল থেকে জয়ী হয় তৃণমূল। ২ লক্ষের বেশি ভোটে জেতেন দেব। ঘাটালের ৭ টি বিধানসভার মধ্যে কেশপুর থেকেই লিড ছিল ১ লাখ ভোটের। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফের এই কেন্দ্র থেকে দীপক অধিকারী জয় যুক্ত হন এক লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে। দ্বিতীয় হয়েছিলেন বিজেপির ভারতী ঘোষ, দলের ভোট বেড়েছিল প্রায় ৩৪ শতাংশ। কেশপুর থেকে লিড ছিল ১ লাখের কিছু কম। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে কেশপুরে তৃণমূল বার বার জড়িয়ে পড়ছে গোষ্ঠী সংঘর্ষে। তাই প্রার্থী দেব কেশপুরের পাশাপাশি অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে বেশি জোড় দিয়েছিলেন। এমনকি প্রচারে বেড়িয়ে দেবকে বলতে শোনা যায় আসন্ন নির্বাচনে লিডের মাপকাঠিতে কেশপুরকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ডেবরা।
Discussion about this post