এই প্রথম, সিকিমের রাজধানী বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র গ্যাংটকের মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরেই দেখা গেল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। বন দফতরের লাগানো লুকোনো ক্যামেরায় উঠল সেই রাজকীয় বাঘের ছবি। যা দেখে উচ্ছ্বসিত বন বিভাগের কর্মীরা এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা। যদিও গত বছর সিকিমের পাঙ্গোলাখা বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যে রয়্যাল বেঙ্গল দেখা গিয়েছিল। সেটি ছিল এই প্রজাতির বাঘের সর্বোচ্চ অবস্থান। এবার সেই উচ্চতাকেও ছাপিয়ে গেলেন দক্ষিণরায়। হিমালয়ের সুউচ্চ গিরিশিরায় গ্যাংটকের কাছেই ইয়ালি অভয়ারণ্যে ট্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি।
হিমালয়ে বাঘের সংখ্যা গণনা, পর্যবেক্ষণ এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছিল সিকিমের বন বিভাগ। তাঁদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিকিমের বিভিন্ন বনাঞ্চলে ট্যাপ ক্যামেরা বসিয়েছিল গ্লোবাল টাইগার ফোরাম (GTF)। তাঁদের ক্যামেরায় এবার ধরা দিলেন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। গত বছর সিকিমের উচ্চতম এলাকায় বাঘের সন্ধান পাওয়ার পরই গ্লোবাল টাইগার ফোরাম গোটা সিকিমে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। যা ‘ইন্টিগ্রেটেড টাইগার হ্যাবিটান্ট কনজারভেশন অফ নেচার’ দ্বারা সমর্থিত এবং জার্মানির KfW ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের অর্থ সাহায্যে আয়োজন করা হয়েছিল। হিমালয়ের উচ্চতম অংশে বাঘের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পেতে পেতে প্রায় শূন্য হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে পাঙ্গোলাখা বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যে রয়্যাল বেঙ্গল দেখা গিয়েছিল। এরপরই বন্যপ্রাণ সংস্থাগুলি বিশেষ উদ্যোগ নেয়।
সিকিমের ইয়ালি বনের উচ্চতা প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ মিটার। এত উচ্চতায় বাঘের দর্শন এই প্রথম। সিকেমের রাজধানী শহর গ্যাংটকের খুব কাছেই অবস্থিত এই বনাঞ্চল। ফলে বন বিভাগের প্রায় ১০০ জন কর্মীকে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে গ্লোবাল টাইগার ফোরাম। এছাড়া, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গের কাঞ্চনজঙ্ঘা ন্যাশনাল পার্ক, শিঙ্গালিলা রণডেনড্রণ অভয়ারণ্য, পাঙ্গালাখা অভয়ারণ্য, লাচেন, লাচুং, চুংথাং, ফেডং, কাবি, ইয়ালির মতো জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও বাঘের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে মনে করছে সিকিম বন বিভাগ। ফলে এই এলাকার বনকর্মীদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Discussion about this post