শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল শিয়ালদা উত্তর এবং মেন শাখার লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের। শনিবারও সেই ভোগান্তি কমার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টে বাতিল করা হয়েছে আরও কিছু ট্রেন। শিয়ালদা মেন স্টেশনের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। এর জেরে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ রয়েছে ওই পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি রেলের নন ইন্টারলকিং কাজের জন্য আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকছে না। ফলে অনেক ট্রেন শিয়ালদা পর্যন্ত যেতে পারছে না। ফলে শনিবার সকাল থেকেই দেখা গেল শিয়ালদা স্টেশনে ঢোকার মুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে একের পর এক ট্রেন। অনেক যাত্রীকেই ট্রেন থেকে নেমে লাইন দিয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। অপরদিকে, শিয়ালদা মেন এবং উত্তর শাখায় বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের ঠাসা ভিড়। অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারছেন না বলে অভিযোগ।
শুক্রবারের পর শনিবারও একই চিত্র শিয়ালদা মেন শাখায়। যাত্রীদের দাবি, এদিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। সকাল থেকেই বহু ট্রেন বাতিল করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। বেশিরভাগ ট্রেনকেই শিয়ালদার পরিবর্তে দমদম জংশন পর্যন্ত চালানো হচ্ছে। ফলে প্রায় প্রতিটি স্টেশনেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রেন। যাত্রীদের অভিযোগ, একেকটি স্টেশনে লোকাল ট্রেন ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে দাঁড়িয়ে থাকছে। একই চিত্র দমদম স্টেশনে ঢোকার মুখে। বনগাঁ শাখার ট্রেনগুলি দমদম স্টেশনে ঢোকার সময় ৩০ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকছে। শনিবার সকালে সাড়ে দশটা নাগাদ ডাউন রাজধানী এক্সপ্রেস দমদমে পৌঁছে যায়, কিন্তু বেলা একটা পর্যন্ত খবর, রাজধানী এক্সপ্রেস দমদম ইয়ার্ডেই দাঁড়িয়ে। ফলে অনেক যাত্রীই বাধ্য হয়ে ভারী ভারী লাগেজ নিয়ে ট্রেন থেকে লাইনে নেমে হাঁটা ধরেছেন। অন্যান্য দূরপাল্লায় ট্রেনেরও একই অবস্থা। লালাগোলা প্যাসেঞ্জার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল বিধাননগর এবং শিয়ালদার মাঝে।
পূর্ব রেলের মূখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে শিয়ালদা স্টেশনে। একই সঙ্গে প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ, পয়েন্ট সরানো, নন ইন্টারলকিং এবং ওভারহেড তার সরানোর কাজ চলছে। রবিবার রাতের মধ্যেই সব শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরে কাজ এগোচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য শিয়ালদা মেন এবং উত্তর শাখায় প্রতিটি স্টেশনেই বারবার ঘোষণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি রেলের আরও দাবি, বহু আগেই যাত্রীদের এই পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবুও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি। শুক্রবার দুপুরে টিটাগড় এবং খড়দহ স্টেশনের মাঝে অতিরিক্র ভিড়ের চাপে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক যাত্রীর।
Discussion about this post