ভারতের প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতির হাল এতটাই বেহাল যে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন এতটাই তলানিতে যে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে গাধার পিঠে চড়তে হচ্ছে পাক সরকারকে। বলা ভালো গাধা রফতানি করেই বড়লোক হতে চাইছে পাকিস্তান সরকার। কিভাবে এটা সম্ভব? জানুন….
বিশ্বের অন্যতম আজব দেশ পাকিস্তান। বিগত কয়েক বছরে জিডিপি বাড়েনি পাকিস্তানে, কিন্তু বেড়েছে গাধার সংখ্যা। তাও অল্পসল্প নয়, রীতিমতো রকেটের গতিতে। একটি পরিসংখ্যান বলছে, বিগত কয়েক বছরে ভারতের পড়শি দেশে গাধার সংখ্যা বেড়েছে গড়পড়তা এক লক্ষ করে। বর্তমানে পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ ছুঁইছুঁই। অর্থনৈতিক অবস্থার একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে পাকিস্তানে। মুদ্রাস্ফিতির জেরে জেরবার পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। রীতিমতো নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো অবস্থা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পাকিস্তান সরকার এবার গাধার পিঠে সাওয়ার হতে চলেছে। কি অবাক হচ্ছেন তো? অবাক হওয়ার কিছু নেই, আসলে পাকিস্তান এবার গাধা বেচে বড়লোক হতে চাইছে।
ব্যাপারটা এবার খুলেই বলি। চিনে গাধার চাহিদা বিপুল। কারণ চিনারা মহার্ঘ্য এক ওষুধ তৈরিতে গাধার চামরা ব্যবহার করে। চিনাদের বিশ্বাস, সেই ওষুধ রক্তশূন্যতা দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চিনে গাধার পায়ের খুরের চাহিদাও ব্যাপক। ফলে এবার পাক সরকার এবার চিনে গাধা রফতানি শুরু করতে চলেছে। যার সাহায্যে প্রচুর বৈদশিক মুদ্রা ঢুকবে পাকিস্তানের শূন্য রাজকোষে। যদিও এই ব্যাপারে পাকিস্তানকে সর্বোতভাবে সাহায্য করছে তাঁদের দীর্ঘকালীন বন্ধু চিন।
পাকিস্তানের সংবাদপত্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে গাধা পালনের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা ছিল ৫৫ লক্ষের কাছাকাছি। কিন্তু পাঁচ বছরে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ লক্ষ ছুঁইছুঁই। সূত্র বলছে, দেশের বেহাল অর্থনীতিকে বদল করতেই পাকিস্তান গাধা পালনের ওপর জোর দিয়েছিল। ফলে ভারতের পড়শি দেশে হু হু করে বাড়ছে গাধার সংখ্যা। এবার সেই গাধা বিক্রি করে প্রচুর বৈদশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলেই খবর। আর এই ব্যাপারে পাকিস্তান পাশে পেয়েছে চিনকে। তাঁরাই মূলত পাকিস্তানের থেকে কিনবে বিপুল পরিমান গাধা। যা দিয়ে মহার্ঘ্য ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রি তৈরি করবে চিনের শিল্পপতিরা। এর আগে আফ্রিকার কয়েকটি দেশ থেকে গাধার চামড়া আমদানি করতো চিন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে চিনের বিবাদ বেঁধেছে। এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে পাকিস্তান। এবার চিনকে তাঁরাই গাধা করতে আগ্রহী বলে জানা যাচ্ছে।
আসলে চিনে ইজিয়াও নামে এক ওষুধ তৈরি হয়। যা মূলত গাধার চামড়া দিয়েই তৈরি হয়। ফলে চিনে গাধার সংখ্যা কমেছে অনেকটাই। চামড়া সংগ্রহের জন্য গাধা নিধন এবং চোরাচালানের ঘটনাও আকছাড় হচ্ছে চিনে। একসময় চিনের রাজপরিবার এবং উচ্চবিত্তদের মধ্যেই এই ইজিয়াও নামক ওষুধের চল ছিল। কিন্তু বর্তমানে চিনের সাধারণ মানুষও এই ওষুধ ব্যবহার করছেন। ফলে চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক। মূলত পাকিস্তান থেকেই চোরাপথে গাধা পৌঁছে যাচ্ছিল চিনে। এবার সেখানেই দাঁড়ি টানতে যায় পাক সরকার। তাঁরা সরাসরি চিনে গাধা রফতানি করতে চলেছে। বর্তমানে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফিতির হার অত্যাধিক। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। ২০২৩ সালে পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফিতি পৌঁছেছিল ৩৮ শতাংশে। ফলে এই সঙ্কট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে শাহবাজ শরিফের সরকার। পাকিস্তানে রাজস্ব ঘাটতির পরিমান ৩.৭ শতাংশ এবং বাণিজ্য ঘাটতির পরিমান ৪.২ শতাংশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পাকিস্তান সরকার এবার গাধা বেচতে চাইছে চিনের কাছে। আশা এতেই ঘুরে দাঁড়াবে পাক অর্থনীতি।
Discussion about this post