এবার ভোট রাজনীতিতে প্রবেশ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর। রাহুলের ছেড়ে যাওয়া ওয়ানাড আসন থেকে লড়াই করবেন বোন প্রিয়াঙ্কা। ওয়ানাড ছাড়লেও ওয়ানাডের পাশে আছি। বললেন সোনিয়া পুত্র। দীর্ঘ জল্পনার যবনিকা। সংসদীয় রাজনীতিতে এবার পা রাখতে চলেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বিগত কয়েক দশক ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ভোট আসলেই বার বার রব উঠেছে নির্ধারিত কোন একটি আসন থেকে প্রিয়াঙ্কার দাঁড়ানোর জল্পনা। কিন্তু শেষমেষ হতাশ হয়েছেন কংগ্রেস-কর্মী সমর্থকরা। মূলত পরিবারতন্ত্রকে সামনে রেখেই ভোটের ময়দান থেকে সরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইন্দিরা নাতনি। কারণ বিরোধীরা বরাবরই গান্ধী পরিবারের পরিবারতন্ত্র নিয়ে সরব। গত ২ টি লোকসভা নির্বাচনের ক্ষরা কাটিয়ে অষ্টাদশ নির্বাচনে ভালো ফল করেছে কংগ্রেস। ওয়ানাড ও রায়বরেলি থেকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হন রাহুল গান্ধী। দুটি ভিন্ন আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সাংসদ পদে থাকা যায় না। তাই নিয়ম মেনে একটি আসন ছাড়তেই হতো রাহুল গান্ধীকে। প্রথম থেকেই জল্পনা ছিল রাহুল রায়বরেলির আসনটি ছাড়বেন না। এবার সেই জল্পনাই সত্যি হল। রায়বরেলি রেখে ওয়ানাড আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন কংগ্রেস সাংসদ। আর এরপরই ওয়ানাডের উপ-নির্বাচনে ঘোষণা হল প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম। এতদিন দলীয় অভ্যন্তরীণ বৈঠক, প্রচারে সক্রিয় থাকলেও সরাসরি ভোটের লড়াইয়ে প্রিয়াঙ্কা এই প্রথম। দাদার ছেড়ে আসা ওয়ানড় আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
দাক্ষিনাত্যের হাত ধরে ভোট রাজনীতিতে প্রবেশ প্রিয়াঙ্কার। গান্ধী ও নেহেরু পরিবারে হিসেবে যা এই প্রথম। সোমবার দলীয় বৈঠক থেকে প্রিয়াঙ্কার নাম ঘোষণার পর রাহুল বলেন, রায়বরেলি ও ওয়ানাড আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে আমি সারা জীবন তা মনে রাখব। কোন কেন্দ্র বাছব, তা নির্ণয় করা খুব কঠিন ছিল আমার কাছে। পদে না থাকলেও ওয়ানড়ের সঙ্গেই থাকব। আপনারা ভাববেন, এখন থেকে আপনাদের দু’জন সাংসদ।
প্রিয়াঙ্কাও পাল্টা জানান ওয়ানাডে রাহুলের অভাব তিনি বুঝতেই দেবেন না। ভাই রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রিয়াঙ্কার গলাতেও একই দাবি শোনা যায়। তিনিও ওয়ানাডের পাশাপাশি রায়বরেলির পাশে থাকার কথা জানান।রাহুলের বিরুদ্ধে লড়ে ওয়েনাডে হেরেছিলেন সিপিআই নেত্রী তথা সাবেক কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজা। প্রিয়ঙ্কাকে কংগ্রেস কেরলে প্রার্থী করায় খুশি সেই অ্যানিও। তাঁর কথায়, “পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের যদি সত্যি মর্যাদা রাখতে হয়, তা হলে সংসদে মহিলা প্রতিনিধিদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। আমি খুশি যে, কেরলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউডিএফ এক মহিলাকে ওয়েনাডে প্রার্থী করেছে। লোকসভা ভোট ঘোষণার আগেই কেরলে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে দিয়েছিল বামেরা। কংগ্রেস আনুষ্ঠানিক ভাবে রাহুলের নাম ঘোষণা করার আগেই ওয়েনাড কেন্দ্রের জন্য অ্যানির নাম ঘোষণা করে বাম জোট এলডিএফ । বস্তুত ইন্ডি জোটে বাম কংগ্রেস থাকলেও কেরলে তারা পরস্পর বিরোধী জোট হিসেবে লড়েছিলেন।
২০১৯ সালে ওয়ানাড ও অমেঠি থেকে লড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজিত হয়ে হারিয়ে ছিলেন অমেঠি আসনটি। সেইসময় রাহুলের মুখ রক্ষা করেছিল এই ওয়ানাডই। সদ্য সমাপ্ত অষ্টাদশ নির্বাচনে রাহুল এবারও ওয়ানাড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সোনিয়া গান্ধীর ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলি থেকেও। দুটোতেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন সোনিয়া পুত্র। তারপর থেকে কোন আসন রাখবেন কোন আসন ছেড়ে দেবেন সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। রাহুল উত্তরপ্রদেশের আসনটি রেখেছেন। নিজের ছেড়ে-আসা আসনটি দিয়েছেন বোন প্রীয়ঙ্কাকে। কেন ওয়ানাড ছাড়লেন রাহুল। তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে অনেকেই মনে করছে ইউপিতে এবার ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। সপার কাছে পিছিয়ে পড়েছে মোদীর দল। ইউপির মানুষের রায় গিয়েছে জোটের ঝুলিতে। সেখানে দাঁড়িয়ে ইউপি থেকে জয়ী আসন রায়বরেলি ছাড়তে চাননি রাহুল।
ব্যুরো রিপোর্ট নিউজ বর্তমান
Discussion about this post