শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত জলপাইগুড়ি সহ উত্তরের সবকটি জেলার ওপর কমলা সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং সহ উত্তরের অন্যান্য জেলাগুলোতে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা। আবহাওয়া দফতরের জারি কমলা সতর্কতার প্রভাব বৃহস্পতিবার রাত থেকেই প্রত্যক্ষ করতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি সহ সমগ্র ডুয়ার্স। শুক্রবার সকালেও চলছে অবিরাম বৃষ্টি, যে কারণে ইতিমধ্যেই তিস্তা সহ অন্যান্য নদী গুলোর জলস্তর যেমন বাড়ছে সেই সঙ্গে ডুয়ার্সের বিভিন্ন পাহাড়ী নদী এবং ঝোরাগুলোতে হড়পা বানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্রেতাদের পথ চেয়ে বসে রয়েছেন দোকান মালিক জোৎস্না মজুমদার। বৃষ্টির জেরে প্রভাব পড়ছে বিক্রি-বাট্টাতেও। বর্ষার দাপটে কার্যত বিপন্ন জলপাইগুড়ি জেলার স্বাভাবিক জনজীবন। পাশাপশি জেলায় অবস্থিত বনাঞ্চল এবং চা বাগান গুলোতেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে একই অবস্থা আলিপুরদুয়ারে।রেকর্ড বৃষ্টিপাত সেখানে। এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৭৬.২০ মিলিমিটার।
অতি ভারী বৃষ্টির ফলে ভুটান সীমান্তবর্তী আলিপুরদুয়ার জেলার গুরুত্বপূর্ণ জনপদ তথা বাণিজ্য কেন্দ্র জয়গাঁ, রাজ্য সড়ক নদীর আকার ধারণ করছে। রাস্তার উপর দিয়ে প্রবল গতিতে বইছে জল। যদিও যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সিকিম ও ভুটান পাহাড়েও চলছে ভারী বৃষ্টিপাত, হড়পা বানের আশঙ্কা ডুয়ার্স জুড়ে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত উত্তরের সবকটি জেলার ওপর কমলা সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। আলিপুরদুয়ারে জারি লাল সতর্কতা। মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত এলাকায় তিস্তা নদীতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত এলাকায় জলঢাকা নদীতে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। এই অবস্থায় উত্তরবঙ্গের বহু জায়গা জলমগ্ন। কালিম্পং থেকে সমতলে তাণ্ডব চালাচ্ছে তিস্তা। নদীর আশেপাশের এলাকায় জল ঢুকে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে গিয়েছে। তিস্তার এহেন রুদ্রমূর্তি দেখে আতঙ্কিত উত্তরবঙ্গবাসী। উদ্বেগে বাড়িঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ।
এদিকে আজও বৃ্ষ্টি জারি উত্তরবঙ্গে। এই আবহে নদীর জলস্তর আরও বেড়েই চলেছে। জল যেভাবে বাড়ছে, তাতে উত্তরবঙ্গে বড়সড় কোনও বিপর্যয় নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাহাড়ি জেলাগুলিতে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আলিপুর হাওয়া অফিসের বুলেটিন অনুযায়ী, দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে আজ অতিভারী থেকে অত্যধিক ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ, ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হতে পারে এই দুই পাহাড়ি জেলায়। এদিকে অত্যধিক ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারেও। এরই সঙ্গে কোচবিহারে আছে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
Discussion about this post