একই দিনে নারীর অধিকারে জোড়াফলা সুপ্রিম কোর্টের। মুসলিম মহিলাদের খোরপোশের দাবিতে ইতিবাচক রায়ের পর দেশের আপামর গৃহবধূদের পাশে দাঁড়াল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, “সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার।” গৃহিণীদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা প্রতিষ্ঠায় ব্যাঙ্কে স্বামীর সঙ্গে ‘জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট’ এবং এটিএম কার্ড ব্যবহারের অধিকার থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা। মুসলিম মহিলাদের খরপোশের পাশাপাশি বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সরব হয় গৃহবধূদের অধিকারের স্বার্থে।
এই ব্যাপারে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার। গৃহবধূদের আর্থিক নিরাপত্তায় বিচারপতিদের দাওয়াই, ব্যাঙ্কে স্বামীর সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট এবং এটিএম কার্ড ব্যবহারের অধিকার থাকা উচিত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, একজন ভারতীয় মহিলা কোনওকিছু পাওয়ার আশা না করে দিনরাত বাড়ির কাজ করেন। বিচারপতিরা বলেন, ‘একজন বিবাহিত পুরুষ তাঁর স্ত্রীর অধিকার নিয়ে সচেতন হবেন। যদি কোনও মহিলার আয়ের উৎস না থাকে তার দায়িত্ব স্বামীর নেওয়া উচিত। স্বামীকেই দেখতে হবে, যেন তাঁর স্ত্রী আর্থিকভাবে স্বচ্ছ্বল থাকেন।’ সুপ্রিম কোর্টের আরো পর্যবেক্ষণ, বাড়িতে মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতা দিলে পরিবারেরই উন্নতি হবে। ‘যে পুরুষরা মহিলাদের অধিকার নিয়ে সচেতন এবং অর্থনৈতিক অবস্থার গুরুত্ব বোঝেন, তাঁদের স্ত্রীর জন্য জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা বা এটিএম কার্ড ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত। বাড়ির দৈনন্দিন খরচের বাইরে মহিলাদের হাত খরচের টাকা দেওয়া উচিত।’
প্রসঙ্গত, বুধবার মুসলিম মহিলাদের খরপোশের বিষয়ে বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, মুসলিম মহিলা আইন ১৯৮৬ ধর্মনিরপেক্ষ আইনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে না। এদিন বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, ”আমরা ফৌজদারি আবেদন খারিজ করে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে এই সিদ্ধান্তে আসছি যে ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা সমস্ত মহিলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কেবল বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রেই নয়।” সেই সঙ্গেই তিনি আরও বলেন, ”অনেক স্বামীরা বুঝতেই পারেন না যে তাঁদের স্ত্রী, যাঁরা গৃহবধূ, তাঁদের উপরে মানসিক দিক থেকে কতটা নির্ভরশীল। সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার।”
Discussion about this post