পদ্মাপাড়ের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠবে শেখ হাসিনার দল? নাকি বাংলাদেশের ভবিষ্যত সেনাশাসন? সমন্বয় ও সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত সেই দেশ। তবে কি সমন্বকদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের ডাক দিলেন সেনাপ্রধান?
সম্প্রতি, সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লা জানিয়েছেন, সংশোধিত আওয়ামি লিগ গঠনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এরপরই একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছে ঢাকা সেনা সদর দফতর। হাসনাত আব্দুল্লাহ পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় সেনার সদর দপ্তর জানিয়েছে, তার পোস্ট ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি ছাড়া অন্য কিছু নয়’। তবে প্রশ্ন উঠছে কেন এই পথ অবলম্বন করতে হচ্ছে সমন্বয়কদের?
ফলে বোঝাই যাচ্ছে, হাসনাতের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ সেনাবাহিনী। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টা বলে মন্তব্য করা হয়েছে সেনাসদরের বিবৃতিতে। তরুণ এই ছাত্রনেতার বক্তব্যকে, হাস্যকর অবাস্তব গল্পের সম্ভার বলেও আখ্যা দিয়েছে সেনাবাহিনী।
যেহেতু আন্দোলনকারী ছাত্রদের সমর্থনে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারের পাশাপাশি ভেঙে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, ভঙ্গুর অর্থনীতির জেরে মূল্যবৃদ্ধি মাত্রা ছাড়িয়েছে। মাথা চারা দিয়েছে জঙ্গিবাদ। সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, এর ফলে গরিব থেকে মধ্যবিত্ত, বাংলাদেশের আমজনতার একেবারেই স্বস্তি মিলছেনা।
এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ গত মাসে শহিদ দিবস অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার সকলকে সতর্ক করে বলেন, “আমাদের অন্য কিছু ভাবতে বাধ্য করবেন না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেননা, যাতে আমাদের অন্য কিছুর কথা ভাবতে হয়।” একইসঙ্গে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার মতো কোনও মন্তব্য না করার পরামর্শও দেন সেনাপ্রধান।
সেনার এই হুঁশিয়ারিতেই বেজায় চাপে ইউনুস ও তাঁর দল। মনে করা হচ্ছে সেই কারণেই তড়িঘড়ি সেনার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হাসনাত আবদুল্লাহ এর এই ধরণের ফেসবুক পোস্ট। যেখানে তিনি দাবি করেন, দিন দশেক আগে দুই সঙ্গী-সহ তাঁকে সেনা বাহিনীর দপ্তরে ডাকা হয়। সেখানে তাঁদের বলা হয়, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামি লিগকে অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে। আওয়ামি লিগের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতানেত্রীরা তাঁদের ভুলের ক্ষমা চেয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠবেন। ‘বঙ্গবন্ধুর আওয়ামি লিগ’ করবেন নেতারা যেখানে হাসিনাকে উপেক্ষা করা হবে। আর এই নতুন আওয়ামি লিগকে মেনে নিতে হবে এনসিপি কে। হাসনাত আরও দাবি করেন, উপস্থিত সেনা কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, আওয়ামিলিগকে বাদ দিয়ে ‘ইনক্লুসিভ ইলেকশন’ করা সম্ভব নয়। এমনকী হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, আওয়ামি লিগের বিরোধিতা করলে তার পরিণাম বুঝতে হবে তাদের।
উল্লেখ্য, এদিকে সেনার উদ্দেশ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত ফেসবুক পোস্টের মতামতে অসম্মতি প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আরেক সংগঠক সারজিস আলম। এরপরই সারজিস এক পোস্ট জানিয়েছেন, ‘১১ মার্চ সেনানিবাসে তাদের ডেকে নেওয়া হয়নি।’ সেনার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি যেভাবে হাসানত সামাজিক মাধ্যমে উল্লেখ করেছে সেটাতেও সমর্থন করেন না সারজিস।
Discussion about this post