শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাবে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই অনেকে খাবারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম গ্রহণ করার চেষ্টা করেন, আবার অনেকে ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট নেন। আমাদের হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে ক্যালশিয়াম বিশেষ কার্যকরী। ক্যালসিয়ামের প্রধান উপাদান হচ্ছে দুধ। দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। কিন্তু প্রতিদিন দুধ খাওয়া সবার জন্য সম্ভব হয়না। এক অর্থনৈতিক কারণে অনেকে দুধ খেতে পারেন না। অন্যদিকে দুধ খেলে বেশিরভাগ মানুষের অ্যালার্জি হয়। অনেকে আবার হজম করতে পারেন না। দুধ বা দুগ্ধ জাত খাবার খেলে হজমের সমস্যা হয় অনেকের। তাই দুধের বিকল্প খাবার প্রয়োজনীয়তা অনেক। এই বিকল্প কি সজনে পাতা হতে পারে? নিশ্চই হতে পারে।
সজনেতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন আছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই কার্যকরী খাবার। যা খেলে এক সাথে অনেক স্বাস্থ্যকরি উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। বিশেষ করে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি মেটাতে পারে সজনে। এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ এতটাই বেশি যে দুধের বিকল্প হতে পারে এই খাবার।
বাঙালি বহুকাল আগে থেকেই সজনেকে তাদের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। সজনের ডাঁটা, পাতা, ফুল প্রভৃতি বাঙালি বরাবরই পছন্দ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনও থাকে। তাই প্রোটিনের প্রয়োজন মেটাতেও সজনে খেতে পারেন। এখন স্কুল, বিদ্যালয় এবং অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র গুলিতে শিশুদের পুষ্টির প্রয়োজন মেটাতে সজনে পাতা, সজনে শাকের ঝোল, ডাঁটার তরকারি খাওয়ানো হচ্ছে।
সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস থাকে। যা হার্টের রোগ ভালো রাখে, রক্তাল্পতা কমায়, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হাড়ের জোর কমায়, এবং প্রোটিনের চাহিদা মেটায়। ফলে অনেকে স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে সজনে পাউডার কিনে খান। তবে বাড়িতেও সজনে শাককে রোড শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়ে পাউডার বানাতে পারেন। যা দীর্ঘদিন ধরে খেতে পারবেন, এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদাও মেটাবে।
সজনে শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে তাই বেশি পরিমাণে সজনে শাক খেয়ে নিলে হজমের গন্ডগোল দেখা দিতে পারে। তবে পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, সজনেকে ডাল বা সবজি জাতীয় খাবারের সাথে খেলে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়। তবে সজনেতে প্রোটিন থাকলেও সেটা মাছ, মাংস, সোয়াবিন, ডিম – এর মতন এতো বেশি পরিমাণে থাকেনা। খাদ্যতালিকায় সজনের সাথে সাথে ওটস, বাদাম, গম, বাজরা ইত্যাদি দানাশস্য জাতীয় খাবার এবং সবুজ শাক সবজি অন্তর্ভুক্ত করে হবে। তাতে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে বেশি। তবে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি মেটাতে দুধের বিকল্প হিসাবে সজনের গুরুত্ব অপরিসীম।
Discussion about this post