শিলিগুড়ি করিডোরে ভারতের সমরসজ্জা, কি করবেন ইউনূস? গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল ইউনিফর্ম ও অস্ত্রধারী আরাকান আর্মি বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় বাংলাদেশের ১০ কি.মি ভেতরে অনুপ্রবেশ করে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগ করেছে স্বয়ং জামায়তে ইসলামী। যারা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের তদারকি সরকারের চালিকা শক্তি। তাঁরাই তাঁদের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করে, বাংলাদেশের ১০ কি.মি ভেতরে অনুপ্রবেশ করে ইউনিফর্ম ও অস্ত্রধারী আরাকান আর্মির সদস্যরা স্থানীয় উপজাতিদের নিয়ে জলকেলি উৎসব পালন করেছে। বাংলাদেশ জামায়তে ইসলামী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে। শুধু তাই নয় এক ফেসবুক পোস্টে জামায়তে ইসলামী জানিয়েছে, বাংলাদেশের সীমানার ১০ কি.মি ভেতরে অনুপ্রবেশ করে উৎসব করার মাধ্যমে তারা মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। এ ঘটনা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর এক মারাত্মক হুমকি এবং উদ্বেগজনক। যদিও এই বিষয়ে বাংলাদেশের তদারকি সরকার এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশি মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের পতাকার পাশে জ্বলজ্বল করছে আরাকান আর্মির পতাকা। তবে কেউ কেউ দাবি করছেন, পরবর্তী সময় ওই এলাকায় বাংলাদেশের পতাকা খুলে নেওয়া হয়েছে আরাকান আর্মির নির্দেশে।
ঠিক কি হয়েছিল? জানা গিয়েছে, গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের বান্দরবান সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ভেতরে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে মিয়ানমারের বিদ্রোহী জনগোষ্ঠী আরাকান আর্মির একদল সশস্ত্র সদস্য। তাঁরা প্রত্যেকেই আরাকান আর্মির সামরিক পোশাক এবং অস্ত্রশস্ত্র সঙ্গে নিয়ে আসে। বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের স্থানীয় উপজাতিদের নিয়ে এক বর্ণাঢ্য জলকেলী উৎসবের আয়োজন করে রীতিমতো মণ্ডপ বেঁধে। জানা যাচ্ছে, দু-দিনের সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন থানচি উপজেলা বিএনপি ও সদস্য, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য, ১ নং রেমাক্রি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ২ নং তিন্দু ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, জেএসএস যুব সমিতির সভাপতি ও মারমা প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি ছিলেন স্থানীয় থানচি উপজেলার মেম্বারাও। বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের বেশ কয়েকজন সদস্যদের দেখা গিয়েছে, যদিও তাঁরা নিরস্ত্র ছিলেন। অর্থাৎ তাঁদের অস্ত্র কেঁড়ে নেওয়া হয়েছিল। আরাকান আর্মি এমনিতেই মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাঁরা যে সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে মৎসজীবী এবং পণ্যবাহী নৌকায় কর আদায় করছিল সেটাও স্বীকার করে নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু বাংলাদেশের তদারকি সরকার কখনও স্বীকার করেনি যে আরাকান আর্মি সীমান্ত লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এবার সেই ঘটনাই সামনে এল। ফলে চরম বিব্রত মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার।
জামায়তে ইসলামী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ প্রশ্ন তুলছে, আমাদের সরকার, বিজিবি ও সশস্ত্র বাহিনী কী করছিল? এটা বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীর জন্য চরম ব্যর্থতা। এ ধরনের উদাসীনতা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি। দেশবাসী এ ব্যাপারে বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীর সুস্পষ্ট বক্তব্য জানতে চায়।
এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইছে বাংলাদেশ দিয়ে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের অংশ অর্থাৎ রাখাইন প্রদেশে একটি করিডোর তৈরি করতে। প্রাথমিক আলোচনায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করার আশ্বাসও দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই আবহেই সামনে এল আরাকান আর্মির অনুপ্রবেশের ঘটনা। তাঁরা শুধু অনুপ্রবেশ করেই ক্ষান্ত থাকলো না, রীতিমতো প্যান্ডেল বেঁধে উৎসব করল। নাচ-গান, খানা-পিনার জমজমাট আয়োজন হয়েছিল। অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, ইউএলএ কমান্ডার লাভ্রের, ইউএলএ লিডার মংথুইহ্লা মারমা, আরাকান আর্মির লেফটেন্যান্ট জোকা, ক্যাপ্টেন ক্যজো রাখাইন, ক্যাপ্টেন ভোলং রাখাইন প্রমুখ। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে বাংলাদেশ ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সেটা এখন দিনের আলোর মতো পরিস্কার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিজিবি যে আরাকান আর্মির সামনে অসহায় সেটাও প্রমান হল এই ঘটনায়। প্রশ্ন উঠছে, আরাকান আর্মি কার ক্ষমতায় বলিয়ান হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটার ঢুকে পড়ল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি ভারত?
বাংলাদেশের পলাতক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে মেজর সুমন আহমেদ এর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ভারত কি বাংলাদেশ...
Read more
Discussion about this post