পাড়ার মোড়ের কোনও দোকান নয়। একেবারে নামকরা জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান। নাম কে সি দাস। দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঙালিকে মিষ্টি খাইয়ে আসছে কে সি দাশ। এবার সেই কে সি দাসের মান পুরসভার আতস কাঁচের নীচে। শহর কলকাতার অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান। কলকাতা জুড়ে যাদের একের পর এক আউটলেট। বিক্রিও হয় হুড়মুড়িয়ে। এবার সেই কে সি দাশের মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করল কলকাতা পুরসভা। বর্তমানে পুরসভার ল্যাবরেটরিতে সংগ্রহ করা মিষ্টি পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু কেন? কি কারণে এই পদক্ষেপ? সম্প্রতি কে সি দাশ থেকে মিষ্টি কিনেছিলেন কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনার জ্যোতির্ময় তাঁতি। তা মুখে দিতে গিয়েই বিপত্তি।
জ্যোতির্ময় বাবু জানান, “মিষ্টিটা মুখে দিয়েই সন্দেহ হয়। কাগজের মোড়কে ছিল সন্দেশটা। মুখে দিয়েই মনে হয় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নীচের অংশটা কেমন আঁঠা আঁঠা।” গ্রীষ্মের দাবদাহ এই ধরনের খাবার খেলে পেটের সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক। আর এই ধরনের মিষ্টি তো আরো ভয়ংকর আমজনতার জন্য। এই ঘটনার পরই তড়িঘড়ি কে সি দাসের মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতা পুরসভার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিকরা। যদি দেখা যায় মিষ্টিতে গন্ডোগোল রয়েছে সেক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফুড সেফটি বিভাগের আধিকারিক ডা. তপন সাফুই জানিয়েছেন, কে সি দাশের মিষ্টি নিয়ে এর আগেও অভিযোগ উঠেছিল। নিত্যদিনই হাজার হাজার মানুষ শহর কলকাতার বিভিন্ন দোকান থেকে খাবার কিনেন। তারা যাতে সঠিক মানের স্বাস্থ্যকর খাবার খান তা দেখার দায়িত্ব কলকাতা পুরসভার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের।
এ ঘটনায় কে সি দাশের কর্ণধার ধীমান চন্দ্র দাশ জানিয়েছেন, তীব্র দাবদাহের জন্যই মিষ্টি ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। মিষ্টি তরতাজা থাকে ১২ ডিগ্রিতে। সেখানে এই মুহূর্তে শহরের তাপমাত্রা ৪৩ এর কাছাকাছি। তাই এই তীব্র গরমে মিষ্টি ঠিক রাখা কষ্টকর। বেশিরভাগ সময় রসগোল্লা, রসমালাইয়ের মতো মিষ্টি ৫ ঘন্টার মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই গরমে। নষ্ট হয়ে যাওয়া মিষ্টি ফেলে দিতে বলা হয়েছে দোকান কর্মীদের দাবি ধীমান বাবুর। কে সি দাসের আউটলেট গুলিতে এসি থাকলেও এই তীব্র দাবদাহে মিষ্টি ভালো রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুরসভার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করায় খুশি কে সি দাশের অধিকর্তা। তার মতে, মিষ্টিতে যদি কোন গন্ডগোল থেকে থাকে তাহলে তারা তা সংশোধন করতে পারবে।
Discussion about this post