নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী এখন রাজনীতির ময়দানে। বাংলা, হিন্দি, কন্নড়, বাংলাদেশি ছবির পাশাপাশি ওড়িয়া ছবিতেও অভিনয় করে সকল দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি। সকলের কাছে অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় হিসাবে জনপ্রিয় হলেও পরিবারের সদস্যদের কাছে ঝুমঝুম নামে পরিচিত। তবে এখন তাঁকে শুধু অভিনেত্রী বললে ভুল হবে, কারণ তিনি এখন বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে সদ্য হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী। ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যাধায়কে হারিয়ে ৭৬ হাজার ৮৫৩ ভোটে জিতেছেন বর্তমানে বাংলার দিদি নং ১। বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও, আলাদা থাকতেন তাঁরা। কিন্তু তাতে কি? রাজনীতির এই কঠিন ময়দানে চলার পথে অভিনেত্রীর একমাত্র সফর সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্বামী প্রবাল বসু। হুগলি কেন্দ্র থেকে দল অভিনেত্রীকে মনোনীত করার পর থেকে, একবারের জন্যও স্ত্রীয়ের সঙ্গ ছাড়েননি প্রবাল বসু। তবে অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রবাল বসুকে ভালো বন্ধু হিসাবেই পরিচয় দিয়েছে বারবার।
প্রথম স্বামী ওড়িয়া অভিনেতা সিদ্ধান্ত মহাপাত্রের সঙ্গে ২০০৪-এ বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পরই, ২০০৭ সালে দ্বিতীয়বার ব্যবসায়ী প্রবাল বসুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন রচনা। তারপর থেকে বেশ ভালোই কাটছিল তাঁদের সাংসারিক জীবন। সন্তানও হয় তাঁদের। এরপরই ছন্দপতন হয় তাঁদের দাম্পত্য জীবনে। ২০১৬ সালে একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যান এই যুগল। তারপর থেকে সিঙ্গেল মাদার হিসাবে একাই ছেলেকে মানুষ করেছেন অভিনেত্রী। সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকলেও সন্তানের কথা ভেবে আইনি বিচ্ছেদ করেন নি তাঁরা। কিন্তু রাজনীতি জগতে পা রাখার পর থেকেই অভিনেত্রীর পাশে সবসময়ই দেখা গেছে তাঁর স্বামীকে । কখনও প্রচারের ময়দানে তো আবার কখনও মনোনয়ন জমা দিতে। সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বারবার জানিয়েছেন, স্ত্রী হিসাবে তিনি নিজেকে শূন্য দেবেন। কারণ, কোনও কম্প্রোমাইজেই তিনি যেতে পারেন নি। সেই কারণে তাঁর বৈবাহিক জীবন একেবারেই ভালো কাটেনি। তবে একজন মা হিসাবে অবশ্যই নিজেকে ১০০-র মধ্যে ১১০ দেবেন বলে জানান অভিনেত্রী।
বর্তমানে যখন রাত দিন নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সময় বাড়ি, ছেলে প্রণীলের দায়িত্ব থেকে অভিনেত্রীর বুটিক, সব কিছুই সমান ভাবে দেখভাল করেছেন প্রবাল বসু। এই সব কিছুকে কেন্দ্রে করে অকপটে রচনা জানান, উই আর অলওয়েজ ভেরি গুড ফ্রেন্ডস। আমরা হয়তো এক সঙ্গে থাকি না কিন্তু আমরা একে অপরের খুব ভালো বন্ধু। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা রাখলে যে ভালোই থাকে, তা আবারও প্রমাণিত। সেই সঙ্গে, প্রথম পক্ষের স্বামী সিদ্ধান্ত মহাপাত্রকে বিশেষ বার্তাও দিলেন অভিনেত্রী। ২৪-এর নির্বাচনে হুগলি থেকে অভিনেত্রীর এই জয়ের নেপথ্যে স্বামী প্রবাল বসুর ভূমিকা যে অপরিসীম, তা বলাই যায়। তবে কি রাজনীতির ময়দান থেকেই দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব ঘুচলো রচনার? প্রশ্ন নেটিজেনদের।।
Discussion about this post