এসএসসি দফতরের সামনে চাকরিহারাদের কান্না, হাহাকার। তার সঙ্গে বাংলার সরকারকে তুলোধোনা করছে তারা। প্রত্যেকের একটি প্রশ্ন, সেটা হল চাকরিহারারা যাবেন কোথায়? পরিবার নিয়ে কোথায় দাঁড়াবেন?
সদ্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে। চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৫২ জনের। তারপর রাজ্যজুড়ে হাহাকার। যদিও তারা ভেবেছিলেন, প্রতিশ্রুতি মতো যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করবে এসএসসি। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্র্যাত্য বসু। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ১৭ হাজার ২০৬ জনের মধ্যে নাকি নেই কোনও অযোগ্য। আর এটা বলেই শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের আর্জি জানিয়েছেন, তারা যেন স্কুলে ফিরে যান। এদিকে চাকরিহারা শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, তারা অযোগ্যদের সঙ্গে স্কুলে পড়াতে যাবেন না। অযোগ্যদের বহিষ্কার করতে হবে। ওরা স্কুলে বাচ্চাদের পড়াতে গেলে তারা স্কুলে যাবেন না। এই দুয়ের মাঝে পড়ে দেখা যাচ্ছে, যোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দিনক্ষণ পেরিয়ে যাচ্ছে। আর সেই ধোঁয়াশার মধ্যে পড়ে আর্তনাদ করছেন চাকরি প্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীরা কি বলছেন এই দিশেহারা অবস্থায় শুনুন…
হাহাকার শুধু নয়, মাননীয়ার দিকে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন চাকরিহারারা। কেউ বলছেন,আমার শিরদাঁড়া সোজা রয়েছে। আবার কেউ বলছেন, আমরা যোগ্য। কিন্তু সরকারের ব্যর্থতায় আমাদের এই পরিণতি। যদি যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা বাছাই করা যাবে না, তাহলে কেন ফের এলো প্রতিশ্রুতি? প্রশ্ন তুলছেন বিক্ষোভকারী চাকরি হারারা।
অনেকে বলছেন, রাজ্য সরকার রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফাঁক খুঁজে একটি খেলা খেলতে চাইছে। যেখানে তৃতীয় কাউন্সিলিং পর্যন্ত যোগ্য চাকরি প্রাপক বলে উল্লেখ করছে, আর সেখানে শিক্ষকদের স্কুলে পাঠানোর চেষ্টা করছে, সেই জটিলতায় পড়তে চাইছে না চাকরিহারারা। এর জেরে একটি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এর জেরে আদেও চাকরিহারা শিক্ষরা স্কুলে যাবেন কিনা। আর যদি তারা স্কুলে না যান, তাহলে সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কি হবে?
এর মধ্যে আরও একটি বিশাল উঠে আসছে তা হল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। তৃণমূল কংগ্রেসের এখন একটি কঠিন সময় চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে প্রত্যেককে আঙ্গুল তুলছেন। মমতার পাশে কেন দেখা যাচ্ছে না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে? তিনি কোথায়? প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তিনি কি কলকাতাতে রয়েছেন নাকি বিদেশে গিয়েছেন? তিনি যদি কলকাতাতে থেকে থাকেন তাহলে, চক্রিহারাদের বিক্ষোভ, আর্তনাদের মাঝে তিনি কোথায়? প্রশ্ন উঠছে, যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে যে সরকারের ব্যর্থতা, সেটা নিয়ে কি বলছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? তিনি কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের পাশে দাঁড়াবেন? নাকি ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করবেন? কারণ পূর্বে অনেকবার দেখা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও সংকটে পড়লে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবার মডেল তুলে ধরেন। এমনকি যখন কেন্দ্র থেকে ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হল, পরিস্থিতির আয়ত্তে আনতে অভিষেক ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের পকেট থেকে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু এখন চকরিহারাদের জন্য এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগেই দেখা গিয়েছিল রেড রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে। এমনকি হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে চাকরি হারাদের নিয়ে একটি বক্তব্য রেখেছিলেন। সেটি একবার শুনুন
অবশ্য বন্দ্যোপাধ্যায় সেই রাজ্য সরকারের হয়ে সোয়াল করবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে তেমন কোন বক্তব্য তার গলাতে শোনা যাচ্ছে না। তাহলে কি তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিলেন? নাকি ভিতরে ভিতরে তিনি রণকৌশল তৈরি করছেন? প্রশ্নটা উঠছে।
Discussion about this post