নিজস্ব প্রতিনিধি: জমি দখল ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল সন্দেশখালি-সহ গোটা উত্তর ২৪ পরগনা। ৫৫ দিন পর অবশেষে তাঁকে ধরতে সক্ষম হন তদন্তকারীরা। সন্দেশখালির ‘কাগুজে বাঘ’ শেখ শাহজাহান বর্তমানে ইডি হেফাজতে রয়েছেন। শাহজাহানের বয়ান নিয়ে এবার বিস্ফোরক দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, জেরায় শেখ শাহজাহান নিজের প্রভাবের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, সন্দেশখালি-সহ গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে বিধায়ক এবং পঞ্চায়েতগুলিতে প্রার্থী কে হবেন সেই বিষয়ে শেষ কথা বলতেন তিনি। ইডি সূত্রের দাবি, জেলার ৪৭টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ২৯৪টি পঞ্চায়েতের প্রার্থী কে হবেন তা ঠিক করতেন শাহজাহানই। মূলত ২০১৬ থেকে ২০২১, এই পাঁচ বছর ধরে জেলার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে শেখ শাহজাহানের আইনজীবীর দাবি, শাহজাহানকে দিয়ে জোর করে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সেই বয়ান ফেরত নিতে হবে বলে দাবি করেছেন তিনি। শাহজাহানের দাবি, বয়ান না দিলে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে মিথ্যা মাদক এবং নারী পাচার মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়েছিল ইডির তরফে। সেই কারণে তিনি বয়ান দিয়েছিলেন বলে দাবি। পরে নিজের বয়ান ফেরত নিতে চেয়েছেন শেখ শাহজাহান। যদিও ইডির আইনজীবী বলেছেন, তাঁকে জোর করে বয়ান রেকর্ড করানো হয়নি। সমস্ত কিছুর ডিজিটাল রেকর্ড এবং সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে বলে জানান ইডির আইনজীবী।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, জেরায় শাহজাহান ইডি আধিকারিকদের জানিয়েছেন, সন্দেশখালি এলাকায় তিনিই শেষ কথা। এমনকি, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারাও শেখ শাহজাহানকে সমীহ করে চলতেন। সন্দেশখালির বিষয়ে তাঁর কথাই শুনে চলতেন জোড়াফুল শিবিরের নেতৃত্ব।
অন্যদিকে শেখ শাহজাহানের বিপুল সম্পত্তির উৎস সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে দাবি ইডির। সন্দেশখালির এই দাপুটে নেতার আরও সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে ইডির আইনজীবী। আদালতে ইডি দাবি জানিয়েছে, গেস্ট হাউস-সহ একাধিক সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে শাহজাহানের নামে, যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
Discussion about this post