নিতান্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া। আর তার জেরেই ভারতীয় রেলের ক্ষতি হয়ে গেল প্রায় ৩ কোটি টাকা। ভাবছেন তো এটা কিভাবে সম্ভব? আসলে এই দূনিয়ায় অসম্ভব বলে কিছুই নেই। এই গল্প হলেও সত্যি ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে। ভারতীয় রেলের অন্যতম ব্যস্ত এই স্টেশনের মুখ্য পরিচালক বা স্টেশন মাস্টার ভেঙ্কটগিরি রাও। জানা গিয়েছে তাঁর বিয়ে হয়েছিল ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে। কিন্তু ইদানিং স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছিল না। কারণ কর্মসূত্রে ভেঙ্কটগিরি রাও থাকেন অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে আর তাঁর স্ত্রী থাকেন মধ্যপ্রদেশের দূর্গ শহরে। তাঁদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ও বিবাদ লেগে থাকতো। সম্প্রতি ওই স্টেশন মাস্টার অন ডিউটি থাকাকালীন তাঁর স্ত্রী তাঁকে টেলিফোন করেন। এবং যথারীতি তাঁদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। টেলিফোনের সেই ঝগড়া চলাকালীন স্টেশন মাস্টারের বলা ছোট্ট একটি শব্দ রেলের ক্ষতি করে দেয় ৩ কোটি টাকা।
জানা যাচ্ছে, ফোনে ওই ব্যক্তি বলেন, বাকি কথা বাড়ি গিয়ে বলবেন। এরপর স্ত্রী ও প্রান্ত থেকে কিছু একটা বলেন। তাই শুনে স্টেশন মাস্টার স্বামী “ওকে” বলেন। আর এই ওকে শব্দটিই তাঁর জীবনে কাল হয়ে নেমে আসে। কারণ সেই সময় স্টেশন মাস্টারের অন্য হাতে থাকা রেডিও ওয়াকিটকি থেকে সেই “ওকে” শব্দটি শুনে অন্য প্রান্তে থাকা এক রেলকর্মী একটি মালগাড়িকে ভুল লাইনে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেন। কারণ ওয়াকিটকিতে অন্য প্রান্তে থাকা সেই রেলকর্মী বিশাখাপত্তনমের স্টেশনমাস্টারকে মালগাড়ির গতিপথ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। আর তিনি সেই “ওকে” শুনেই মালগাড়িটিকে অন্য লাইনে পাঠিয়ে দেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মালগাড়ি মাওবাদী প্রভাবিত অঞ্চলে চলে যায়।
যে লাইনে রাতের বেলা ট্রেন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা ছিল। সেই লাইনেই চলে যায় ওই মালগাড়ি। যার ফলস্বরুপ রেলকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। পরে এই ঘটনার জন্য দায়ি করে বিশাখাপত্তনমের স্টেশন মাস্টার ভেঙ্কটগিরি রাওকে সাসপেন্ড করে রেল কর্তৃপক্ষ। জানা যাচ্ছে, ওই স্টেশন মাস্টারের বিরুদ্ধে এমনিতেই বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। পাশাপাশি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও চলছে বিগত কয়েক বছর ধরে। বর্তমানে সেই মামলা ছত্তিশগড় হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। এর মধ্যেই ঘটে গেল আরেক বিপত্তি। স্বামী-স্ত্রীর টেলিফোনে ঝগড়ার জেরে ভারতীয় রেলের ক্ষতি হয়ে গেল ৩ কোটি টাকা। যা এক বিরল ঘটনা বলেই মনে করছেন রেলের আধিকারিকরা।
Discussion about this post