ভ্রমণ করতে কে না ভালোবাসেন , আর সেটা যদি হয় বাঘ দেখার আগ্রহ, তাহলে যে কোনো ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তি তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। গরম কালে অনেকেই ভ্রমণ করতে চান না, কারণ অত্যধিক গরমে চিড়িয়াখানায় তেমন বন্য পশু পাখির দেখা মেলে না আবার অন্যদিকে মানুষ একটুতেই ক্লান্তির শিকার হয়।তবে যদি বাঘ মামার কথায় আসা যায়, তাহলে আজকাল চিড়িয়াখানায় তাদের তেমন ভাবে দেখা মিলছে না। তার তুলনায় ভারতের বিশেষ কয়েকটি অঞ্চলে যদি আমরা যাই তবে সহজেই সাক্ষাৎ পেতে পারি জাতীয় পশুর। পর্যটকরা কাছ থেকে বাঘের গর্জন শোনার জন্য যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিকে জয় করতে পিছুপা হননা। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুকে উপেক্ষা করে তারা জঙ্গলে ভ্রমণে যেতে প্রস্তুত। ভারতের এই জাতীয় পশুটিকে চিড়িয়াখানার তুলনায় ভারতের কয়েকটি উদ্যানে গেলেই সহজে দেখা মেলে। বিস্তারিত জেনে নিন এই প্রতিবেদনে।
বান্ধবগড়
এই উদ্যানে রয়েছে বিশাল জীববৈচিত্র্য। উদ্যানটিতে চিতাবাঘ এবং বিভিন্ন প্রজাতির হরিণের একটি বড় প্রজনন জনসংখ্যা রয়েছে। রেওয়ার মহারাজা মার্তান্দ সিং ১৯৫১ সালে এই অঞ্চলে প্রথম সাদা বাঘ ধরেছিলেন। ঐতিহাসিকভাবে গ্রামবাসী এবং তাদের গবাদি পশুরা বাঘের থেকে হুমকির মুখে ছিল। উদ্যানের আশেপাশে খনি খনন কার্যক্রম বাঘের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। উদ্যানটির নামটি এলাকার সবচেয়ে বিশিষ্ট পাহাড় থেকে এসেছে, কথিত আছে যে পাহাড়টি লঙ্কার উপর নজর রাখার জন্য ভগবান রামচন্দ্র তাঁর ভাই লক্ষ্মণকে দিয়েছিলেন। দুর্গটি গন্ড রাজবংশের রাজা তৈরি করেছিলেন। । এখানেও বেশ ভাল সংখ্যক বাঘ রয়েছে। বাঘ দেখার জন্য এখানে বিভিন্ন পয়েন্ট রয়েছে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে সেই পয়েন্টগুলি থেকে বাঘ দেখা যায়।
কানহা
কানহা টাইগার রিজার্ভ, কানহা-কিসলি জাতীয় উদ্যান নামেও পরিচিত । এটি ভারতের বাঘ সংরক্ষণের একটি এবং মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান । বর্তমান কানহা এলাকাটি ২৫০ এবং ৩০০ কিমি. এর হলন এবং বানজার নামে দুটি সংরক্ষিত অঞ্চলে বিভক্ত। কানহা জাতীয় উদ্যান ১ জুন ১৯৫৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল এবং ১৯৭৩ সালে একটি বাঘ সংরক্ষণাগারে মনোনীত হয়েছিল। উদ্যানটিতে বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় চিতাবাঘ, স্লথ বিয়ার, বড়সিংহ এবং ঢোল রয়েছে। এটি ভারতে প্রথম বাঘ সংরক্ষণাগার।
রণথম্ভোর
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান হল ভারতের রাজস্থানের একটি জাতীয় উদ্যান। যার আয়তন ১,৩৩৪ বর্গ কিমি। এটি উত্তরে বনাস নদী এবং দক্ষিণে চম্বল নদী দ্বারা আবদ্ধ। উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত ঐতিহাসিক রণথম্ভোর দুর্গের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে।ভারতের এই অঞ্চলে সব থেকে বেশি বাঘের দর্শন পাওয়া যায়। যেহেতু এখানে বাঘের সংখ্যা বেশি, তাই সময় বুঝে গেলে তাদের দেখা পাবেনই। এখানে মূলত দু’টি সাফারি হয়।একটি ভোরে , অন্যটি বিকেলে।
টাডোবা
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর জেলায় অবস্থিত টা়ডোবা জাতীয় উদ্যান। তার ভিতর রয়েছে টাডোবা-অন্ধেরি ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পটি। এখানে বাঘ দেখার সেরা সময় গরমকাল। তীব্র গরমে মাঠঘাট, নদী-নালা শুকিয়ে খটখটে হয়ে যায়। তাই বনের পশুদের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ওয়াটার হোল তৈরি করা থাকে। সময়ে-অসময়ে সেখানে জল খেতে বা গা ডুবিয়ে বসতে আসে জাতীয় পশু ।
পান্না
পান্না জাতীয় উদ্যানটি মধ্যপ্রদেশের পান্না ও ছতারপুর এলাকায় অবস্থিত। এই স্থানের মূল আকর্ষণ জাতীয় পশু। শুধু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার নয় , বিভিন্ন প্রজাতির বাঘের দেখা মিলবে এখানে। মাডলা এবং হিনৌলতা— বাঘ দেখতে হলে এই দু’টি প্রবেশদ্বার দিয়ে যাওয়াই ভাল। এখানেও বাঘের সংখ্যা বেশ ভালই। ‘কোর এরিয়া’তে পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না।
Discussion about this post