আম বলতেই আমরা বুঝি হিমসাগর বা গোপালখাস। আবার মালদার ফজলি বা ল্যাংড়া আমও আমরা বাজারে পাই। বিভিন্ন জাতের আমের দামও কমবেশি হয় তাঁর গুণগত মানের জেরে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম কোনটি জানেন? শুনলে অবাক হবেন, সেই আম প্রতি কেজি পাওয়া যায় ৩ লক্ষ টাকায়। আর একটি আম কিনতে আপনার খসবে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। একেকটি আমের ওজন হয় ২০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম মতো। কী অবাক হচ্ছেন? না মশাই, ঠিকই শুনছেন। প্রতি জাপানের মিয়াজাকি প্রজাতির আমের দাম প্রতি কেজি ৩ লক্ষ টাকার আশেপাশে।
বর্তমানে মিয়াজাকি আম শুধু জাপান নয়, ভারতেরও কিছু কিছু এলাকায় উৎপন্ন হচ্ছে। আমাদের বাংলায় আমের জন্য বিখ্যাত মালদাতেও মিয়াজাকি আম ফলাচ্ছেন এক আমচাষী। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই আমের এত দাম। কি এমন পুষ্টিগুণ আছে এই আমে? তার আগে জেনে নেওয়া যাক মিয়াজাকি আমের ইতিহাস। ১৯৮০ সাল নাগাদ জাপানের কিউশু প্রদেশের মিয়াজাকি শহরে এই আম প্রথম ফলেছিল। মিয়াজাকি শহর আম গাছের জন্যই বিখ্যাত। এথানকার গবেষকরা নতুন এই প্রজাতি উদ্ভাবন করেন। পুরোনো আমলের প্রজনন কৌশল এবং আধুনিক প্রযুক্তির মিশেলেই এই প্রজাতির আম উদ্ভাবন করেছিলেন জাপানি গবেষকরা। ফলে এই নতুন প্রজাতির আমের নাম হয় মিয়াজাকি। এই আমের যেমন স্বতন্ত্র একটা গন্ধ এবং স্বাদ রয়েছে, তেমনই এর রক্ষ টকটকে মেরুন। ফলে খুব সহজেই মিয়াজাকি আম জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। কিন্তু এই আম ফলানো খুব সহজ নয়। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় এর জন্য। তাই এই প্রজাতির আমের দাম আকাশছোঁয়া।
মিয়াজাকি আমের বিজ্ঞানসম্মত নাম হল ‘তাইকো নো টোমাগো’ (TAIYP-NO-TOMAGO)। টকটকে মেরুণ রঙের জন্য এই আমকে আবার ডাকা হয় ‘এগ অফ সানসাইন’ (EGG OF SUNSHINE) নামেও। আগেই বলেছি, এই আমের দামই হল এর বিখ্যাত হওয়ার অন্যতম কারণ। আর এত দামের কারণ হিসেবে বলা যায়, এর চাষের পদ্ধতিগত ফারাক এবং অবশ্যই স্বাদ। আর এই আমে রয়েছে কয়েকটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং কিছু রাসায়নিক উপাদান। যেমন মিয়াজাকি আমে রয়েছে, প্রচুর পরিমানে বিটা-ক্যারোটিন এবং ফলিক অ্যাসিড। এছাড়া রয়েছে জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ই, এ এবং কে। পাশাপাশি মিয়াজাকি আমে পাওয়া যায় কপার ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপাদান। একটি আমে এতকিছু থাকার ফলে এই আম শরীরে পক্ষে অত্যন্ত উপকারি, এ কথা বলাই বাহুল্য। সবচেয়ে বড় বিষয় হল, মিয়াজাকি আম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া মিয়াজাকি আম ত্বক এবং চোখের পক্ষে উপকারি, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনেও সাহায্য করে।
Discussion about this post