দীর্ঘ সময় পর ফুটবলে ভারত সেরা হয়েছে বাংলা। দিন কয়েক আগেই বাংলার ফুটবলররা কেরলকে হারিয়ে সন্তোষ ট্রফি জিতে কলকাতায় ফিরেছে। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আইএসএলে খেলার জন্য দল পেয়ে গেল বাংলার কয়েকজন ফুটবলার। আর ফাইনালে গোল করে বাংলাকে জেতানো রবি হাঁসদাকে নিয়ে টানাটানি চলছে ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যে। যা বাংলার ফুটবলের জন্য একটা ভালো লক্ষণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘ আট বছর পর সন্তোষ ট্রফির শিরোপা জয় করল বাংলা ফুটবল দল। বর্ষবরণের রাতে হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে বাংলা ১-০ গোলে হারায় কেরলকে। আর এর সঙ্গেই রেকর্ড ৩৩তম খেতাবের অধিকারী হল বাংলা। সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাংলার ফুটবল দলের কোচ সঞ্জয় সেন ও তরুণ ফুটবলাররা শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে গিয়েছেন। বাংলার এই ঐতিহাসিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বর্তমান সময়ে বাংলার তিন প্রধান ক্লাবে বাঙালি ফুটবলার দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। প্রীতম কোটাল, সৌভিক চক্রবর্তীর মতো কয়েকজন যদিও দাপটের সঙ্গে আইএসএল বা জাতীয় দলে খেলছেন, কিন্তু বাকিদের সুযোগ পেতে কালঘাম ছুটছে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন জাতীয় দলে ৮-৯ জন বাংলার ফুটবলার দাপটের সঙ্গে খেলতেন। কিন্তু পরবর্তী সময় বাংলার ফুটবলে খরা দেখা দেয়। যার ফলস্বরূপ বাঙালি ফুটবলারদের সেভাবে দেখা যায়নি ময়দানে। কিন্তু এবার বাঙালি কোচ সঞ্জয় সেনের হাত ধরে একঝাঁক প্রতিশ্রুতিমান বাঙালি ফুটবলার উঠে এসেছে। যা বাংলার ফুটবলকে আবার ভারত সেরা করতে সাহায্য করল। শুধু তাই নয়, এবার ওই দলের বেশ কয়েকজন প্রতিশ্রুতিমান বাঙালি ফুটবলারকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে আইএসএল ও আই লিগের দলগুলিতে। যেমন রবি হাঁসদা, এই তরুণ স্ট্রাইকারকে নিতে ঝাঁপিয়েছে ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব। জানা যাচ্ছে, রবি হাঁসদা নিজে চাইছেন আইএসএল খেলতে। সে কারণে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব তাঁর প্রথম পছন্দ। কারণ ইস্টবেঙ্গল রবিকে চাইছে জুনিয়র দলের জন্য। কিন্তু মহমেডানে খেললে রবি আইএসএল দলে সুযোগ পেতে পারে। জানা যাচ্ছে, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে রবি হাঁসদার পরবর্তী গন্তব্য ঠিক হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, বাংলার স্ট্রাইকার রবি হাঁসদা ১২ গোল করে এবার সোনার বুটও জিতেছেন। যা সন্তোষ ট্রফির ইতিহাসে একটি বড় রেকর্ড। মহম্মদ হাবিবের রেকর্ড ভেঙে রবিই এখন সন্তোষ ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
অপরদিকে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের মনতোষ মাঝি এবং বিক্রম প্রধানকে ইতিমধ্যেই দলে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অর্থাৎ এই দুই প্রতিশ্রুতিমান বাঙালি ফুটবলারকে এবার লাল হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে। অন্যদিকে আবু সুফিয়ানের সঙ্গে চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের। এছাড়া সন্তোষ ট্রফি জয়ী সঞ্জয় সেনের বাংলা দলের আরও কয়েকজন তরুণ ফুটবলারকে দলে নিতে ঝাঁপিয়েছে আই লিগের কয়েকটি দল। ফলে চলতি মরসুমেই ভারত সেরা বাংলা দলের অধিকাংশ তরুণ ও প্রতিশ্রুতিমান বাঙালি ফুটবলার দাপিয়ে খেলবে আইএসএল বা আই লিগ। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলকে ৫০ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলা দলকে নবান্নে আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্বর্ধনা জানান। পাশাপাশি এই দলের কয়েকজনকে চাকরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Discussion about this post