অনূর্ধ্ব ২০ জাতীয় যুব ফুটবল কাপ শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিল হামলা বিস্ফোরণের জর্জরিত ছত্তিশগড়ে । এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল আজ ,খেলবে দিল্লি ও কর্ণাটক। যারা জিতবে তাদের নিয়ে যাবে আড়াই ফুট উচ্চতার ১৫ কেজি ওজনের স্বামী বিবেকানন্দ কাপ। টানা ৪০ দিনে ৫৫ টা ম্যাচ। লাদাক, উত্তরখণ্ড থেকে শুরু করে আন্দামান ,পুদুচেরি, অরুণাচল প্রদেশ, আসমুদ্র হিমাচলের ৩২ রাজ্যের সেরা যুব ফুটবলাররা খেললেন দেশের সবচেয়ে আতঙ্কের মাওবাদী ডেরা দণ্ডকারণের বস্তার জেলায় ।
বস্তার জেলায় জঙ্গলে ঘেরা ছোট্ট শহর নারাইনপুর । রায়পুর থেকে ট্রেনে নেমে বাসে লাগে ৬ ঘন্টা আর রায়পুর এয়ারপোর্ট থেকে নেমে গাড়ি নিয়ে সড়ক পথে আসতে লাগে তিন ঘন্টা। পিছিয়ে থাকা আদিবাসী উপজাতিদের এই বাসভূমি গত চার দশকে অনেক বদলেছে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের ছোঁয়ায়। কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যে খেলাধুলার জন্য এমন পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারে তা নারাইনপুরে না দেখলে বোঝা যাবে না। অ্যাস্ট্রোটার্ফ সহ একটা ঘাসের সুন্দর প্রমাণ সাইজের ফুটবল স্টেডিয়াম যাতে রয়েছে ফ্ল্যাটলাইট সহ হাজার দশেক দর্শক আসনের গ্যালারি। আছে দুটো প্র্যাক্টিস গ্রাউন্ড অ্যাথলেটিকস ট্রাক। সুন্দর ড্রেসিং রুম। প্রায় ৭০০ জনের থাকার ব্যবস্থা। স্থানীয় ছেলে মেয়েরা এখানে ফুটবল, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল, বাস্কেটবল খেলে সারা বছর ধরে। তাদের জন্য জন্য নির্দিষ্ট কোচ রয়েছেন।
গত বছর থেকে এখানে ফুটবলার তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন ই এফ এ ,পুনে এফসি,ইস্টবেঙ্গল একাডেমির সফল কোচ রঞ্জন চৌধুরী। এখানেই সারা দেশের যুব ফুটবলারদের চেনানোর মঞ্চ বাঁধলেন এ আই এফ এফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন গীতা পাঠ থেকে ফুটবল খেলা ভালো। আর এখানকার রামকৃষ্ণ মিশনের পরিকল্পনা দেখে আমার মনে হল এই এলাকার সম্পর্কে মানুষের আতঙ্ক কাটাতে একটা বড় মাপের ফুটবল টুর্নামেন্ট করা দরকার । প্রথম বছরেই মিশন এত সাফল্যের সঙ্গে টুর্নামেন্ট করল যে আগামী দু’বছর এই টুর্নামেন্ট এখানেই করব।
অনেক বছর ধরেই দেশের অনূর্ধ্ব ২১ ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে দেশের রিজার্ভ টিম গঠন করতে হিমশিম কাচ্ছিলেন জাতীয় কোচ ইগর স্টিম্যাচ। ভবিষ্যতে খেলোয়াড়দের জন্য ভরসা করতে হয়েছিল ক্লাব গুলির ওপর। স্বামী বিবেকানন্দ কাপই কল্যাণ প্রতিভা বাছাইয়ের জন্য বেশ কয়েকজন স্পোটার নিয়োগ করেছেন। যাদের মধ্যে কল্যাণের একদা সতীর্থ টিএফের কোচ রঞ্জন তো রয়েছেই, আছেন বিমল ঘোষের মত অভিজ্ঞ কোচও। মাওবাদী ডেরায় ভারতীয় ফুটবলে স্বস্তির বার্তা।।
Discussion about this post