ক্রিকেটের ভগবান হলেন শচীন তেন্ডুলকর । সারা পৃথিবী জুড়ে যার ভক্ত, সেই শচীন তেন্ডুলকর এখন কার ভক্ত জানেন। অবাক করা এই সত্যি ঘটনাটি হল বর্তমানে ১৩ বছরের একটি মেয়ের ফ্যান হয়েছেন শচীন তেন্ডুলকর। আর ঐ ১৩ বছরের মেয়েটির নাম হল শুশীলা মিনা। রাজস্থানের একটি ছোট গ্রামে থাকেন এই শুশীলা। ভাবছেন রাজস্থানের একটি ছোট গ্রামে থেকে, কিভাবে শচীনের মন জয় করলেন এই শুশীলা। শচীন তো এখন রীতিমত তার তারিফ করছেন। শচীন নিজের স্যোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে রাজস্থানের একটি ছোট মেয়ে ক্রিকেট খেলছে।ছোট্ট ঐ শুশীলার খেলা দেখে শচীন তেন্ডুলকর অবাক হয়েগিয়েছেন। এবং খেলা দেখে আপ্লুত হয়ে ছোট মেয়েটির খেলার প্রসংশা করেছেন। ভিডিওটি শেয়ার করে শচীন লিখেছেন, এই মেয়েটির বোলিং-এ জাহির খানের স্টাইল দেখা যাচ্ছে। এখন জানতে ইচ্ছে করছে শচীনের থেকে প্রসংশা পাওয়া এই মেয়েটি কে। তাহলে জানিয়ে রাখি, রাজস্থানের প্রতাপ গড় জেলার একটি ছোট্ট গ্রামে বসবাস করে। স্কুলের পোশাকে এই ছোট্ট মেয়েটিই ভয়ংঙ্কর বল করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।
যার বয়স মাত্র ১৩ বছর, কিন্তু বোলিং করার ধরণ এবং বলের গতি দেখে বহু ক্রিকেট দ্বিগজও অবাক। শুশীলার জন্ম ভীষন গরীব পরিবারে, তার মা এবং বাবা, দু-জনেই মজুরি খেটে সংসার চালায়। কিন্তু গরীব পরিবারে জন্ম গ্রহন করেও শুশীলা ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা অটুট রেখেছে। স্কুল পর্যায়ের খেলায় শুশীলার বোলিং স্পিড ঘন্টায় ১৩০ থেকে ১৩৫ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বোলিং এর জন্য কোন বিশেষ জুতোর কথা ছেড়ে দিন, বোলিং এর জন্য তার কোন জুতোই নেই। খালি পায়ে বল করা এই মেয়েটি কেবল তার কোচের সহযোগীতাটুকুই পেয়ে থাকে। শচীন তেন্ডুলকর পোষ্টে লিখেছেন শুশীলার বোলিং দেখলে জাহির খানের বোলিং মনে পড়ে যায়। এবার জাহির খান নিজে শচীনের এই মন্তব্য সমর্থন করে লিখেছেন আমি শচীনের এই মন্তব্য পুরোপুরি সমর্থন করি। শুশীলার বোলিং যে কোন ক্রিকেট প্রেমীর মনে ছাপ ফেলতে বাধ্য এবং বেশ আশাজনক। শুশীলার এই যাত্রা খুবই কঠিন, কারণ শুশীলার পরিবার খুবই গরীব। বাড়ীতে খেলা দেখার জন্য কোন টিভি নেই এমন কি খেলার কোন সরঞ্জামও নেই তার। শুধু মাত্র কোচের থেকে শিক্ষাটুকু নিয়েই নিজেকে প্রমান করেছেন শুশীলা। যে শচীন তেন্ডুলকর শুশীলার তারিফ করেছেন সেই শচীনকে দেখেই নি শুশীলা, কারণ তার বাড়িতে কোন টিভি নেই। আর যার বাড়ি শুধু কাচা বাড়িই নয়, বাড়ীর ছাদ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের ত্রিপল। বাড়ীতে গ্যাস নেই আছেন মাটির উনান। মা বাবা মজদুরি করা স্বত্বেও চান যে তাদের মেয়ে ক্রিকেট খেলে নাম যশ খ্যাতি অর্জন করুক।
শুশীলার শিক্ষক ঈশ্বর লাল মীনা সবার মনে খেলাটে স্বপ্নের মত ঢুকিয়ে দিয়েছেন, যাতে তারা খেলাটে ভালোবেসে স্কুলে আসে,এবং মেয়েদের মধ্যে যেহেতু প্রতিযোগীতা কম তাই তাদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী।কিন্তু যেখানে স্কুলের অবস্থা তথৈবচ, রাস্তা ঘাট অত্যন্ত খারাপ, স্কুলের বাচ্চাদের না আছে পোশাক না আছে পায়ে জুতো। যদি কিছু আছে তা হল প্রশাসনের মিথ্যে আশ্বাস। যদিও শিশুদের মনে জেদ আছে, চেষ্টা আছে কিছু করে দেখাবার। তবে এর জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন তা কি জুটবে শচীন তেন্ডুলকরের প্রসংশার পর। সেটাই এখন দেখার। আর শচীন তেন্ডুলকর যার ফ্যান, তাকে ভবিষ্যতে ভারতের ক্রিকেট টিমে দেখার আশা করতেই পারি। নিউজ বর্তমানের পক্ষ থেকে রইল সকল শুশীলাদের জন্য শুভেচ্চা আর শুভকামনা।
Discussion about this post