‘যত ভোট, তত গাছ’, ২ মে মনোনয়ন জমার দিনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব । তবে প্রতিশ্রুতিই সার নয়। এবার ভোট মিটতেই ময়দানে নেমে পড়েছেন কাজে। যেমন কথা তেমন কাজ। রবিবার ঘাটাল সংসদীয় কেন্দ্রের বিভিন্ন অঞ্চলে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ‘সবুজ ঘাটাল’ কর্মসূচির সূচনা করলেন। তাঁর কথায়, বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে লড়াই করার এটাই একমাত্র পথ। দেবের পরনের টি-শার্টেও লেখা ‘সবুজ ঘাটাল’। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৮,৪১,১৯৫ টি ভোট পেয়েছেন অভিনেতা সাংসদ দেব। এবার নিজের কথামতো, গাছ লাগানোর কর্মসূচির তোড়জোড় শুরু করলেন দেব।
ইতিমধ্যে তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথম দফায় রবিবার ২ লাখ গাছ লাগানোর কাজ শুরু করলেন। মোট ১০ টি নার্সারিতে ২ লাখ গাছের চারা অর্ডার দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই গাছ লাগানোর কাজ শুরু হলো। সবং, ডেবরা, পিংলা, কেশপুর, ঘাটাল, দাশপুর ও পশ্চিম পাঁশকুড়া এই সাত বিধানসভাতেই রবিবার গাছ লাগালেন দেব। ‘আকাশবনি, শাল, সেগুন, শিশু, আম, জাম ও কাঠাল ইত্যাদি গাছ লাগানো হলো। শুধু তাই নয়, এদিন মানস ভুঁইয়াকে পাশে নিয়েই ঘাটালবাসীকে ধন্যবাদ জানালেন দেব। এরপরই নেতাকে হিরো বলে সম্বোধন করতে শোনা গেল দেবের মুখে। এই ভাবেই সারাদিন ধরে ছুটির দিনে জেলা, ব্লক ও অঞ্চলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সবুজায়ানে ব্যস্ত থাকলেন ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবের মন্তব্য, “ভারতবর্ষের ইতিহাসে আজ অবধি কোনও সাংসদ এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। যদি অন্তত ৪০-৫০ শতাংশ সাংসদ নিজেদের সংসদীয় কেন্দ্রে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেন, তাহলে আমাদের দেশে সবুজায়ন হবে। বদলে যাবে চেহারাও।কেন্দ্রের প্রত্যেকটা মানুষকে করজোড়ে প্রণাম জানাচ্ছি, যেভাবে আপনারা পাশে ছিলেন, তার জন্য ধন্যবাদ। যাঁরা আমাকে ভোট দেননি, তাঁদেরকেও ধন্যবাদ। প্রথমে বলেছিলাম, যতগুলো ভোট পাব ততগুলো গাছ লাগাব। তবে সবকটা বিধানসভা থেকে যেরকম সাড়া পাচ্ছি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শুধু আমার জন্য নয়, ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল, বিজেপি কিংবা সিপিএম-কংগ্রেস সমস্ত দল মিলিয়ে যতগুলো ভোট পড়েছে, ততগুলো গাছ লাগাব। ঘাটালের রাস্তা তৈরির সময়ে অনেক গাছ কাটা হয়েছিল। সেই অভাব পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেটা আজ থেকেই শুরু করছি। শুধু বৃক্ষরোপণই নয়, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার ব্যবস্থাও করব। এই গাছ লাগানোর মধ্যে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থ নেই।”
সবং পিংলা ডেবরাতে গাছ লাগানোর পর বিকেল বেলা এসে পৌঁছান কেশপুরে। যে বিধানসভা থেকে তিনি লিড পেয়েছেন এক লক্ষ তিন হাজার ভোটে। দেব কেশপুরে পৌঁছাতেই শুরু হয়ে যায় আবির খেলা। দেবকেও সবুজ আবির মাখিয়ে দেওয়া হয়। পরে কেশপুরের মুগবাসানে দলীয় কার্যালয়ের সামনে তিনি একটি চারা গাছ রোপন করে দিয়ে যান।
Discussion about this post