ন্যায্য মূল্যে ধান কেনার নামে অভিনব দুর্নীতি। অভিযোগ নামখানার দুটি ন্যায্য মূল্যের ধান কেনা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। নামখানার এল এস কোঅপারেটিভ ও চন্দন পিড়ি কিষান মান্ডির ঘটনা। চাষিদের কাছ থেকে ধান অল্পস্বল্প কেনার পর প্রতিদিনই কয়েক হাজার টন করে ধান কেনা হচ্ছে কেবলমাত্র ওটিপি দিয়ে। কী করে? জানা যাচ্ছে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পায় এমন চাষিদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের অ্যাকাউন্ট চালু করে দেওয়া হচ্ছে। কিছু টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সহায়তা কেন্দ্রে নিয়ে এসে ধানবুক ও আঙুলের ছাপ দিয়ে দিনের পর দিন চলছে এই প্রতারণা। অভিযোগ চাষিরা ধান না দিলেও অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে টাকা। এরপর কিছু টাকার বিনিময়ে সেই টাকা চাষিদের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। সরকারের দেওয়া টাকা সরকারি কর্মী ও মিল কর্তৃপক্ষের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে।
নিয়মটা অনেকটা এইরকম, একটা চাষির জমির পরিমাণ যাই থাকুক না কেন, কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতাধীন হলে ৩০ থেকে ৯০ কুইন্টাল ধান দিতে পারবে সে। সরকার নির্ধারিত ৩০ কুইন্টাল ধানের দাম ৬৬ হাজার ৯০ টাকা। যার মধ্যে মিল দেয় ৬১ হাজার ৩০০ টাকা। সরকার থেকে দেওয়া হয় ৪ হাজার ৭৯০ টাকা। অভিযোগ সরকার থেকে প্রাপ্ত এই টাকা তছরূপ চলছে। সরকার ও রাজ্যের শাসকদলের নেতারা অভিযোগের কথা শুনে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন। পাশাপাশি তাঁদের দাবি এই বিষয়ে আগে কিছুই জানতেন না তাঁরা। ধানের বিনিময়ে টাকা। ধান ছাড়া টাকার দেওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করলেন ধান ক্রয় কেন্দ্রের পারচেজ অফিসার বিনোদ বিহারী দাস
বলাবাহুল্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক কৃষকদের কল্যানের উদ্দেশ্যে ২০১৯ সালে চালু হয়। কৃষি বিভাগ দ্বারা পরিচালিত এই প্রকল্পে বছরে খারিফ ও রবি শস্যের সময় কৃষকদের দুটি সমান কিস্তিতে সর্বাধিক ১০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। ধান বিক্রি নিয়ে আগেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছিল। প্রতিবারই চাপের মুখে রাজ্যের শাসকদলের প্রতিনিধি ও প্রশাসকদরা তদন্তের আশ্বাস দেয়। দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কাজের কাজ আদতে কিছুই হয়না। পুরোটাই আইওয়াশ। প্রমাণিত হয় চটজলদি।
Discussion about this post