বর্তমানে বাংলার হিন্দু যুব সমাজের আইকন সুরোজ কুমার সিং। আসন্ন রথ যাত্রাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হল হাওড়ায়। পুলিশের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন এই সুরোজ কুমার সিং এর।
শুভ রথযাত্রার আগে হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় রথ যাত্রার শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই পোস্টারকে ঘিরে শুরু হলো বচসা কারণ সে পোস্টারে রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানাতে দুটি ভাষা ব্যবহার করতে দেখা দিয়েছে। সেগুলির একটি ইংরেজি এবং অপরটি উর্দু। হ্যাঁ, বাংলায় ব্যবহার করা হচ্ছে উর্দু ভাষা। এই রাজ্য যেন ইসলামিক রাজ্যে পরিণত হয়েছে এমনটাই মনে হচ্ছে সেই পোস্টার গুলি দেখলে। অর্থাৎ বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে হিন্দুদের অত্যন্ত পবিত্র ও আবেগের রথযাত্রার শুভেচ্ছায় কোথাও লক্ষ্য করা গেল না বাংলা ভাষা। আর এই ধরনের শুভেচ্ছা বার্তা দেখা গেলে স্বাভাবিকভাবেই যে কোন মানুষই প্রতিবাদী হয়ে উঠবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যুবসমাজের এই নতুন আইকন সুরাজ সিং তিনি এক অভিনব পন্থায় প্রতিবাদ করলেন এই ঘটনার। তিনি প্রতিটি পোস্টারে উর্দু ও ইংরাজি ভাষার জায়গায় বাংলায় শুভ রথযাত্রা স্টিকার সাটিয়ে দিলেন। আর এই পন্থার কারণ হিসেবে তিনি জানাচ্ছেন যেহেতু ওই পোস্টার গুলিতে প্রভু জগন্নাথ দেবের ছবি ছিল সে কারণে তিনি ওই পোস্টারগুলিকে নষ্ট করতে পারেননি ফলে এর প্রতিবাদ হিসেবে তিনি ওই দুটি ভাষা মুছে দিয়ে তারপর বাংলায় শুভ রথযাত্রা স্টিকার সাঁটিয়ে দিলেন। এরপর সুরজ সিং ও তার দল প্রতিটি জায়গায় যতগুলি এই ইংরেজী ও উর্দু ভাষার রথ যাত্রার পোস্টার রয়েছে সবগুলিতেই একইভাবে বাংলায় শুভ রথযাত্রা লেখা স্টিকার সাঠিয়ে দিতে শুরু করলেন। আর এই প্রতিবাদ দেখেই রীতিমত ছুটে এসে বলেছেন প্রশ্ন তোমাদের এত সাহস হয় কিভাবে যে এই পোস্টের উপর স্টিকার লাগাচ্ছো? সেখানে পরিষ্কার সুরজ সিং পুলিশকে জানায় পোস্টার গলিতে উর্দু ভাষায় শুভ রথযাত্রা লেখা আছে সেই কারণেই তাদের এই প্রতিবাদ। তাতে পুলিশের সাফাই ভাষা তো ভাষাই, সেটা যে ভাষাতেই লেখা থাক সেটা কোন ভাবার বিষয় নয়। এরপরে সুরজ সিং ও তার দল পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। এদিনের এই ঘটনার ভিডিও এখন রীতিমতো ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। আর এই দৃশ্যের সামনে আসতে কিন্তু যুব সমাজের অন্যতম এক নাম হয়ে উঠেছে সুরজ সিং। দেখুন সেই ভিডিও,,,
এদিন স্পষ্টই সুরজ সিংয়ের দাবি, বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে এবং হিন্দুদের অত্যন্ত আবেগের রথযাত্রার শুভেচ্ছা হিসেবে কখনোই উর্দুভাষা ব্যবহার করতে দেবে না তারা। তাদের এই দৃঢ় প্রতিবাদ দেখে ধীরে ধীরে স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসতে দেখা যায় ফলে আরো জোরালো হয়ে ওঠে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার এই প্রতিবাদী লড়াই। ফলে প্রতিটি জায়গায় যেখানেই এই ধরনের রথ যাত্রার পোস্টার পড়েছিল সেই প্রতিটি পোস্টারেই জ্বলজ্বল করতে থাকে বাংলায় শুভ রথযাত্রা। এ প্রতিবাদের দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই সমাজ মাধ্যমে রীতিমত হইচই পড়ে যায়। সুরত সিংকে এই কাজের জন্য নমস্কার ও শ্রদ্ধা জানিয়ে অনেকেই লেখেন অসাধারণ দুর্দান্ত একটি কাজ। সুরজ কুমার সিংকে অনেক ধন্যবাদও জানিয়েছেন তারা। এক কথায় বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করতে যুব সমাজের একজন উপযুক্ত কান্ডারী হিসেবে কাজ করলেন সুরজ কুমার সিং।
Discussion about this post