১৭ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদের ইন্দিরা পার্কে সদ্য প্রয়াত অধ্যাপক ও মানবাধিকার কর্মী জি এন সাইবাবার স্মরণে সভা করল সিপিআই-এর হায়দ্রাবাদ কাউন্সিল। এই সভায় বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন প্রতিরোধ। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সিপিআই নেতা ই.টি. নরসিংহ, ভি.এস. বোস, বি. প্রভাকর, চাঁদ ভেঙ্কট রেড্ডি, এম. আদি রেড্ডি, নাগরিক অধিকার কর্মী জি. হরগোপাল, তেলেঙ্গানা দলিত অধিকার ফোরামের নেতা মারুপাকা অনিল কুমার, রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি কমিটির নেতা বাল্লা রবি এবং মানবাধিকার ফোরামের নেতা আনোয়ার খান প্রমুখ। বাস্তবে সাইবাবা ভারত রাষ্ট্রের দ্বারা মাওবাদী হিসেবে চিহ্নিত হলেও তাঁর মুক্তির দাবিতে এর আগে প্রস্তাব পাশ করেছিল সিপিআই। ২০২৩ সালে ১৪ই থেকে ১৮ই অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসের প্রস্তাবপত্রে জি এন সাইবাবার জামিন রদ প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল, “সুপ্রিম কোর্টের আদেশ একটি অভূতপূর্ব এবং অস্বাভাবিক আইনী পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে একজন ঘোষিত নির্দোষ ব্যক্তিকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে যা ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা এবং নাগরিক স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।” ১৭ই অক্টোবরের সভায় এই প্রসঙ্গ আবার তুলে আনলেন সিপিআই নেতা চাঁদ ভেঙ্কট রেড্ডি। তিনি বললেন, “ইউএপিএ কংগ্রেস সরকার এনেছিল মোদীর সময় তা আরও দাঁত নখ বসাচ্ছে। সরকার ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী সাইবাবাকে ১০ বছর জেলে রেখেছিল। বিজেপি সংবিধান পরিবর্তন করতে চায় এবং বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে ইউএপিএ ব্যবহার করছে। তাদের হয় গৌরী লঙ্কেশের মতো হত্যা করা হচ্ছে বা ভারাভারা রাওয়ের মতো জেলে পাঠানো হচ্ছে। সমস্ত গণতন্ত্রীদের একত্রিত হওয়া উচিত এবং এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত।” এই সভায় নাগরিক অধিকার আন্দোলন কর্মী জি হরগোপাল বললেন ইউএপিএ আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র তিন শতাংশ। তিনি বলেন, “এই আইনটি বিনা বিচারে এবং জামিনে মানুষকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক করার অনুমতি দেয়। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় এখনও বিচার শুরু হয়নি। সাঁইবাবার মৃত্যুর পর সমাজে সাড়া পড়ে। এই একই সাড়া আগে পেলে ভালো হতো। রাষ্ট্র প্রতিশোধমূলক মনোভাব অবলম্বন করে যার ফলে তার মৃত্যু হয়। গণতন্ত্রে ইউএপিএ-র কোনও জায়গা নেই।” তিনি আরও বলেন, “এই আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত।”
প্রসঙ্গত, বেকসুর খালাস হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই জি এন সাইবাবার মৃত্যু অধিকার আন্দোলন কর্মীদের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। শুধু ইউএপিএ নয়, মাত্র ৫৪ বছর বয়সী অধ্যাপকের মৃত্যুতে উঠছে ‘স্লো পয়জনিং’-এর মতো প্রসঙ্গও। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু একটি তথ্যভিত্তিক রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে, গত তিন বছর যাবত ইউএপিএ মামলার অর্দ্ধেকেরই তদন্ত স্থগিত রয়েছে কিন্তু অভিযুক্তরা যথারীতি জেলে। ভিগনেস রাধাকৃষ্ণন এবং নীতিকা ফ্রান্সিসের লেখা ওই নিবন্ধের ভূমিকাতেই তাঁরা লিখেছেন, “তদন্ত আর স্থবিরতা যখন সমতূল্য, তখন ইউএপিএর নিষ্ঠুরতা তদন্তের প্রক্রিয়াকেই শাস্তিতে পরিণত করছে।”
Discussion about this post