দু’দিনের ভারত সফরে এসেছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান। এই সফরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও আলোচনায় বসবেন সালিভান। জো বাইডেনের প্রশাসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টার এটিই সম্ভবত শেষ ভারত সফর। এই সফরে ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়, সে দিকেই নজর সকলের।
হাতে আর দুই সপ্তাহ তারপরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভারত সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে তাঁদের বৈঠকে। এবং বৈঠকে গুরুত্ব দেওয়া হবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তার বিষয়ের উপরেও। আইআইটি দিল্লিতেও একটি আলোচনাসভায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন উপদেষ্টা সালিভানের। ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি আমেরিকা সফর সেরে ফিরেছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করও।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারে ২০২১সালের ২০ জানুয়ারি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন জেক সলিভান ৷ সফর প্রসঙ্গে মার্কিন এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, এই সফরে প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ বিজ্ঞানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করবেন দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সালিভান ও অজিত দোভাল। সূত্রের খবর, বিদায় বেলায় দিল্লি পৌঁছলেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান। ভারত সফরে আজ তিনি এস জয়শংকরের সঙ্গে দেখা করেন। ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বিষয়ে আলোচনা হয় তাদের বৈঠকে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি আদানপ্রদান এবং সমুদ্রপথে নিরাপত্তা বৃদ্ধি নিয়ে কথা হয় দু’জনের। এরপরই ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা করার কথা জেক সালিভানের।
মার্কিন উপদেষ্টা সালিভানের সঙ্গে বৈঠকের পরে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করে বিদেশ মন্ত্রী জয়শংকর লেখেন, ‘দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।’ এদিকে মার্কিন-ভারত সম্পর্ক উন্নতি রক্ষেত্রে সালিভানের ব্যক্তিগত অবদানকে বিশেষ ভাবে কুর্নিশ জানান জশংকর। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কনফারেন্স কলে এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “গত ৪ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক অনেক বেশি উন্নত হয়েছে ৷ আগামী দিনে এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে দুই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টার এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ৷ পরবর্তী সরকারের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে এই আলোচনা ৷”
এদিকে ট্রাম্পের আগমনে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ফের মধুর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মাঝে বিদায় বেলায় ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ‘মতবিরোধ’ দূর করার শেষ সুযোগ জেক সালিভানের এই দিল্লি সফর। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, এই সফরকালে নাকি ডোভলের সঙ্গে সালিভান বাংলাদেশ নিয়েও আলোচনা করতে পারেন। তাঁর সঙ্গে দেশের নয়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেবেন কংগ্রেস সদস্য মাইকেল ওয়াল্টজ ৷ নতুন উপদেষ্টা সম্পর্কে জয়শঙ্কর জানান, ওয়াল্টজের সঙ্গে কাজ করতে তিনি উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন ৷ অবশ্য, ওয়াল্টজের সঙ্গে দেখা করার আগেই সলিভানের সঙ্গে বৈঠক সারেন জয়শঙ্কর ৷ সেই বৈঠকেও দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় ৷ এস জয়শঙ্করের মার্কিন সফরের পর জেক সুলিভানের ভারত সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল ৷
Discussion about this post