পঞ্জিকা অনুসারে ৩১শে অক্টোবর দীপাবলি ও কালীপুজো। এই কালীপুজোর দিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় দক্ষিনেশ্বরের মা ভবতারিণীর মন্দিরে। মায়ের পুজোর পাশাপাশি ভোগের অপেক্ষাতেও থাকেন সকলেই । আর কালীপুজোর দিন দেবীর বিশেষ পূজা অর্চনার ব্যবস্থা করা হয় এমনকি মায়ের ভোগেও আছে নানা বিশেষত্ব।
উল্লেখ্য, দক্ষিণেশ্বর মন্দির যেমন ধর্মীয় স্থান হিসাবে বিখ্যাত , ঠিক তেমনই এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে ঐতিহাসিক ঘটনা দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে দেবী কালী ভবতারিণী রূপে পূজিতা হন। মন্দিরের ইতিহাসের নানা পুঁথিপত্রে দেখা গিয়েছে ১৮৫৫ সালের ৩১ মে, স্নান যাত্রার দিনে এই মন্দিরে হিন্দু শাস্ত্রের রীতিনীতি একাগ্র ভাবে মেনে পণ্ডিত রামকুমার চট্টপাধ্যায় মায়ের বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই দেবীর নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে শ্রী শ্রী জগদীশ্বরী কালীমাতা ঠাকুরানী, কিন্তু ভবতারিণী দেবীর কোনও উল্লেখই নেই! শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব দেবীকে ভবতারিণীকে মনে প্রাণে মানতেন, তার জেরেই হয়তো হয়েছে এই নামকরণ করেছেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সাক্ষীও এই দক্ষিনেশ্বর মন্দির।
মায়ের ভোগ ছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্যও আলাদা করে ভোগ রান্না হয় কালীপুজোর দিন। এ ছাড়াও বিশেষ অতিথিদের জন্য পাঠানো হয় দক্ষিণেশ্বরের ভোগ।
আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বছর কী বিশেষত রয়েছে মহাভোগে? মন্দির কতৃপক্ষ জানাচ্ছে ‘‘এ বছর মহাভোগের বানানোর দায়িত্ব অনেকের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মেনুতে থাকছে পোলাও আর ধোঁকার ডালনা।
আর এই ভোগ রান্নার সম্পূর্ণ প্রণালী দিদা ঠাকুমাদের অনুসরণ করেই করা হয়।
ভোগের বাসন্তী পোলাও এর ক্ষেত্রে দেখা যায় কড়াইয়ে ঘি গরম করে কাজু ভেজে তুলে রাখতে হবে এবার কড়াইয়ে জল দিয়ে জল ফুটে উঠলে জলে দিয়ে দিন
তেজপাতা, এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি আর সামান্য হলুদ গুঁড়ো। আবার জলে দিয়ে দিন আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা গোবিন্দভোগ চাল। এ বার মিশিয়ে দিন কেওড়া জল আর গোলাপ জল। চাল ৯০ শতাংশ সেদ্ধ হয়ে এলে চাল থেকে জল ঝরিয়ে নিন। একটি বড় পাত্রে অর্ধেকটা গরম ভাত ঢেলে দিন। এ বার তার উপর ছড়িয়ে দিতে হবে ভেজে রাখা কাজু-কিশমিশ আর অর্ধেকটা চিনি আর পরিমাণ মতো ঘি। এ বার বাকি ভাতটা দিয়ে উপর থেকে বাকি কাজু-কিশমিশ, চিনি আর ঘি ছড়িয়ে দিন। এ বার পাত্রটি ঢাকা দিয়ে রেখে দিয়ে । মিনিট পাঁচেক পর ভাল করে মিশিয়ে নিলেই ভোগ পরিবেশনের জন্য তৈরি বাসন্তী পোলাও।
Discussion about this post