বাংলাদেশে চলছে চরম অরাজকতা। ৫ই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। গঠিত হয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। প্রধানের মাথায় নোবেল জয়ী ইউনূস সরকার। গোটা দেশ অনেক আশা নিয়ে ইউনূসকে সরকারের মাথায় বসিয়েছে। কিন্তু অশান্ত তো কমলোই না। বরং তা উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাগাতার আক্রমণ চালানো হচ্ছে সে দেশের সনাতনী হিন্দুদের উপর। সেই অশান্তি যেন দেখেও দেখছেন না মহম্মুদ ইউনূস। বাংলাদেশের হিংসার ঘটনা নিয়ে এইবার সরাসরি নোবেল কমিটিকে চিঠি দিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো। শান্তির জন্য নোবেল পেয়েছিলেন ইউনূস। কিন্তু এই ঘচনায় পুনঃবিবেচনার জন্য নোবেল কমিটিকে চিঠি দিলেন সাংসদ। এদিন তিনি নোবেল কমিটিকে চিঠি দিয়ে লেখেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, শান্তির জন্য নোবেল প্রাপ্ত নাম আজ হিংসার সঙ্গে জড়িত। নোবেলজয়ী মহম্মুদ ইউনূসের আমলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। চরম হিংসায় সেখানকার সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। ভাঙা হচ্ছে মন্দির। পাশাপাশি অকারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে হিন্দুদের। যা একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে।
তিনি আরও লেখেন, ইউনূস একসময় সমাজ সংস্কারের ভূমিকায় থাকলেও এখন হিন্দু নিধনকারী তকমা জুটেছে তার। দুর্গাপুজোতেও বাধা দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। এমনকি ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনারও কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের কথাও জানিয়েছেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারিতে হিন্দু নেতাদের হুমকি এবং হামলার ঘটনাও উল্লেখ করেছেন সাংসদ।
নোবেল কমিটির নৈতিক দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। শুধুমাত্র বিজেপি সাংসদই নন, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও মহম্মুদ ইউনূসের নোবেল পাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। শান্তির জন্য যে মানুষটিকে নোবেল দেওয়া হল, তিনি তাঁর নিজের দেশেই শান্তি বজায় রাখতে পারছেন না। তার বদলে সামনে আসছে হাস্যকর কিছু বিবৃতি। স্পিকারের বক্তব্য, নোবেল তার থেকে কেড়ে নেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে আমি মতামত দেওয়ার কেউ নই। কিন্তু এরকম একটি মানুষকে কীভাবে নোবেল দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তিনি আরও আক্ষেপ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে খুব ভালোবাসতেন ওপার বাংলার মানুষেরা। তিনি বলেন, আমি নিজে ওখানে গিয়েছি, আমার পরিবারের লোকেরা ওখানে ছিল। কিছু মৌলবাদী লোক ইচ্ছে করে এই সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। এর প্রতিবাদ করতেই হবে। প্রত্যেকের এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করা উচিত। তবে এখানেই প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি আন্তজার্তিক মহলে অজানা নয়। তবহে কি নোবেল কমিটি পুনঃবিবেচনার জন্য ভাববে? ছিনিয়ে নেওয়া হবে নোবেল জয়ীর থেকে নোবেল?
তবে শুধুমাত্র ভারতই নয়, আন্তজার্তিক মহলেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি সমালোচনাও হচ্ছে প্রবল। সেখানকার সরকারের মাথায় নোবেলজয়ী ইউনূস বসেও রাশ টানতে পারছেন না। জ্বলছে পদ্মাপারের দেশ। সবচেয়ে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের। ভারতেও প্রবল বিক্ষোভ, প্রতিবাদ হচ্ছে। সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে, সেই দাবি তুলে দিকে দিকে প্রতিবাদ। পাশাপাশি বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ওদেশের মানুষ চিকিৎসা করাতে কলকাতা বা এই দেশে নয়, পাকিস্তান যাক। যদিও বাংলাদেশ ইস্যুতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরী সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু উল্টে বাংলাদেশের চোখরাঙানি ভারতকে। তবে হাত গুটিয়ে বসে নেই নয়া দিল্লিও। সুকৌশলে সমস্ত রকমের পদক্ষেপ করবে ভারতও, তা বলাই বাহুল্য।
Discussion about this post