জনগণের কাছে ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে সেনার উপর আর আস্থা রাখতে পারছেনা জনগন। বিগত দশ মাসে যে ঘটনা গুলি ঘটেছে সেদেশে তার মধ্যে অন্যতম আওয়ামীলীগ সরকারের পতন। সেনাবাহিনী বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে কোনোভাবেই আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হতোনা বলে মনে করেন অনেকেই। অর্থাৎ সেনার ইচ্ছাতেই সরকার পতন শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি সবটাই ঘটতে দেখা গিয়েছে। এক কথায় আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরই সেনা প্রধানকে দেখা গেলো মুখ্য ভূমিকায়।
সেনাপ্রধানের ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই চর্চা চলছে, তবে প্রথমে সেটি ইতিবাচক চর্চা হলেও বর্তমান পরিস্থিতি যেন স্পষ্ট সামনে আনছে সেনা প্রধানের নেতিবাচক ভূমিকা। গত বছর ৫অগাস্ট গণ অব্যউত্থানে পতন হয় হাসিনা সরকারের, তার দু মাস আগেই সেদেশের সেনাপ্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। অর্থাৎ সেনাপ্রধান এর নিয়োগের দু মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটে গেল, যে বিষয়টি আজ ভাবাচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিককে। কারণ, গত বছর জুলাই আন্দোলন, হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর পর, ঘোষণা করা হয়েছিল সরকার পতনের দিন ৫ অগাস্ট জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন সেনা বাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। সকলেই সেনাপরোধানের ওপর আস্থা ভরসা ব্যক্ত করে অধীর আগ্রহে ছিল দেশকে আঁচলাবস্থা থেকে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে।
আর সেই সময় জাতির উদ্দেশে ভাষনে সেনাপ্রধান অত্যন্ত সংক্ষেপে জানালেন তিনি দেশের দায়িত্ব নিচ্ছেন। এরপর ৫ অগাস্ট থেকে আগামী ৩দিন বাংলাদেশে চললো সেনা শাসন। সরকার বিহীন রইলো বাংলাদেশ। শুরু হলো সীমাহীন মবের রাজত্ব।এরপর ৮ অগাস্ট বাংলাদেশে গঠিত হয় ডঃ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বধীন অন্তরবর্তী কালীন সরকার। গত বছর থেকে আজ পর্যন্ত চলা এই অন্তরবর্তী সরলার গঠিত হয়েছিল সেনাপ্রধান এর সিদ্ধান্তেই। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে সেনা প্রধানের বিরোধিতা করছে এই অন্তরবর্তী সরকার ঘনিষ্ট ছাত্র সমন্বয়করা। রীতিমতো সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের অপসারণ এর পরিকল্পনায় মেতে উঠেছে তারা। কিন্তু গত বছর যাদের বিপক্ষে গিয়ে দেশে সরকার পতনে পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করল সেনাবাহিনী সেই আওয়ামীলীগ পন্থী ও দলের নেতা কর্মী তারা কেউই যেমন সেই সময় সেনাপ্রধান এর বিরোধীতা করেনি তেমনই বর্তমানেও বিরোধিতা করতে দেখা যাচ্ছেনা আওয়ামীলীগ পন্থী ও দল নেত্রী শেখ হাসিনাকে। আর দীর্ঘ ১০ মাসে সেনা প্রধানের এই নেতিবাচক ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ জনগন জেনারেল ওয়াকারকে মীরজাফর হিসাবে গণ্য করতে শুরু করেছে। সেনাপ্রধান একজন সংবিধান ও আইন মেনে দেশ নিয়ন্ত্রণকারী এক ব্যক্তি ফলে তাকে সম্মান করা সকলেরই কর্তব্য। তবে অন্তরবর্তী সরকার ও তার ঘনিষ্ট দের দ্বারা দেশ যে ভাবে বিশৃঙ্গখলার দিকে এগিয়ে চলেছে তাতে দীর্ঘ ১০ মাস পর সেনাপ্রধান এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক।
Discussion about this post