বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দীর্ঘ ১০ মাসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান যে বক্তব্য বিবৃতি গুলি প্রকাশ্যে এনেছেন সেগুলি নিয়ে বর্তমানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। বাংলাদেশে এখন তিনটি শক্তির বলয় বর্তমান। এক সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের নেতৃত্বাধীন বলয়, দুই প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদী অনুসারী নেতৃত্বধীন বলয় এবং তিন বৈশ্বিক বহিঃ শত্রু বা বন্ধুদেশ। অর্থাৎ এই বিভিন্ন ধরনের চাপ উপেক্ষা করে দেশ নিয়ন্ত্রণে রাখা স্বাভাবিকভাবে অত্যন্ত কঠিন একজন ব্যক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা। তাই সেনাপ্রধানের ভূমিকা নিয়ে কখনও নেতিবাচক কখনও বা ইতিবাচক মন্তব্য উঠে এসেছে।
গতবছর জুন মাসে সেনাপ্রধানের পদে নিয়োগ করা হয় জেনারেল ওয়াকার উজ জামানকে। এরপরে দেশে সরকার পতন হয় নতুন অন্তরবর্তী সরকার গঠন হয় ফলে তখন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী কে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখার প্রত্যাশা করেছিল বিভিন্ন মহল। এমনকি সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানের পক্ষে থেকে একাধিক মহলের তরফে সরকারের তরফে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার কথাও বারে বারে উল্লেখ করা হয়েছিল। এরপর দেখা যায় অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে সেনা বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার দেওয়া হয় যেটি বাংলাদেশে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিষয় বলাই যায়। কিন্তু ম্যাসেজট্রেসে পাওয়ার হাতে নিয়েও বাংলাদেশের সেনা দেশজুড়ে যে কথার পরিস্থিতি তা সামাল দিতে ব্যর্থ হল। এদেশের দিকে দিকে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করল মব ভায়োলেন্স। ফলে ধীরে ধীরে এই মব ভায়োলেন্স গ্রাস করতে শুরু করলো বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে। আর সেখানে সেনা বা পুলিশ কাউকেই সক্রিয় কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি একাধিকবার মবের বিরুদ্ধে নির্দেশ এসেছে কিন্তু কোন কার্যক্রম শুরু হয় নিয়ে বিরুদ্ধে।
আবার অনেকে দাবি করছেন গত বছর হাসিনা সরকারের পতনের পর এই সেনাপ্রধানের নির্দেশে সে দেশে গঠিত হয়েছিল মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবং সেনাবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার ফলেই দেশে সরকার পতনের মত একটি ঘটনা ঘটে বলে দাবি করা হচ্ছে। ফলে শেখ হাসিনা ক্ষমতার ছোট হয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর পরেই সকলে মনোনিবেশ করেন বাংলাদেশ সেনানিবাসের উপর। আর সেই সময় যদি সেনাপ্রধান বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেন বা নিজেরা সত্যি হতে চাইতেন সেটাই মেনে নিত দেশের জনগণ পাশাপাশি আরও এক প্রাচীন রাজনৈতিক দল বিএনপি তারা আগামী কিছু বছরের জন্য কোন প্রতিবাদই করতেন না এমনটাই দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান নিজের সততা নির্লিপ্ততা ভয় বা যেকোনো কারনের জন্যই নিজে ক্ষমতা হাতে তুলে না নিয়ে ক্ষমতা দিয়েছেন মোহাম্মদ ইউনুসের ওপর।
তবে বর্তমানে বাংলাদেশে সেনা প্রধানের বিরোধিতা করছে এই অন্তরবর্তী সরকার ঘনিষ্ট ছাত্র সমন্বয়করা। রীতিমতো সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের অপসারণ এর পরিকল্পনায় মেতে উঠেছে তারা। কিন্তু গত বছর যাদের বিপক্ষে গিয়ে দেশে সরকার পতনে পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করল সেনাবাহিনী সেই আওয়ামীলীগ পন্থী ও দলের নেতা কর্মী তারা কেউই যেমন সেই সময় সেনাপ্রধান এর বিরোধীতা করেনি তেমনই বর্তমানেও বিরোধিতা করতে দেখা যাচ্ছেনা আওয়ামীলীগ পন্থী ও দল নেত্রী শেখ হাসিনাকে। আর দীর্ঘ ১০ মাসে সেনা প্রধানের এই নেতিবাচক ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ জনগন জেনারেল ওয়াকারকে মীরজাফর হিসাবে গণ্য করতে শুরু করেছে। সেনাপ্রধান একজন সংবিধান ও আইন মেনে দেশ নিয়ন্ত্রণকারী এক ব্যক্তি ফলে তাকে সম্মান করা সকলেরই কর্তব্য। তবে অন্তরবর্তী সরকার ও তার ঘনিষ্ট দের দ্বারা দেশ যে ভাবে বিশৃঙ্গখলার দিকে এগিয়ে চলেছে তাতে দীর্ঘ ১০ মাস পর সেনাপ্রধান এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক।
Discussion about this post