এ বার ওদের শিক্ষা দেওয়া হবে”, তাইওয়ানকে ঘিরে চিনের যুদ্ধ মহড়া শুরুর পর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য বেজিংয়ের। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তাইওয়ানের আকাশ এবং জলসীমায় নতুন করে পুরদস্তুর যুদ্ধ মহড়া শুরু করে দিয়েছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। প্রথমে চিনা সেনা দাবি করেছিল, ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র এবং সমুদ্রে প্রত্যাঘাতের ক্ষমতা যাচাই করতেই চিনা সেনার ইস্ট্রার্ন থিয়েটার কমান্ড এই মহড়া শুরু করেছে। কিন্তু পরে বেজিং জানিয়ে দেয়, তাইওয়ানকে শিক্ষা দেওয়াই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। তবে কী আমেরিকার ওপর চাপ বাড়াতেই কি চিনের এই সিদ্ধান্ত, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিগত সময়ে তাইওয়ান এবং আমেরিকার উপর চাপ বজায় রাখতে চিনা সেনা তাইওয়ান প্রণালী এবং সংলগ্ন সামুদ্রিক এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে বেজিং। সেই মতো বেশ কয়েকটি চিনা যুদ্ধজাহাজ সেদিকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার কোনও রকম ঘোষণা ছাড়াই তাইওয়ানের সীমান্ত লাগোয়া জল ও আকাশসীমায় পুরোদস্তুর যুদ্ধ মহড়া শুরু করে দিয়েছে চিনের লালফৌজ। তাইওয়ান প্রণালী-সহ দক্ষিণ চিন সাগরের বিভিন্ন অংশে চিনা রণতরী এবং যুদ্ধবিমানের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুক্রবারই চিনের সামরিক মুখপাত্র লি শি জানিয়ে দেন, তাইওয়ান স্বাধীনতার নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। তাই কঠোর শাস্তি হিসেবে এই মহড়া চালানো হচ্ছে। বহিরাগত কোনও শক্তির হস্তক্ষেপ এবং উস্কানির বিরুদ্ধেও কড়া সতর্কবার্তা দিচ্ছে বেজিং।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে আমেরিকার হাউস অফ কমন্সের স্পিকার ন্যান্সি পোলসি তাইওয়ান সফর করেন। এরপর থেকেই তাইওয়ান প্রণালীতে চিনের সেনাবাহিনীর তৎপরতা বেড়ে যায়। ওই এলাকায় নতুন করে উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিগত এই দুই বছরে একাধিকবার চিনা সেনা তাইওয়ানের আকাশ এবং জলসীমার মধ্যে ঢুকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই আবহেই আমেরিকার সপ্তম নৌবহরের কয়েকটি রণতরী তাইওয়ান প্রণালীতে ঢোকে। এরপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপে দুই যুযুধান দেশ কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরোপুরি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাইওয়ান প্রণালীতে। অপরদিকে পুরো পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে নয়াদিল্লি। ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় সেটা দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে ভারত, এমনটাই জানা যাচ্ছে। তবে চিনের এই যুদ্ধ মহড়ার জেরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিপর্যস্ত হচ্ছে বলেই দাবি একাংশের।
Discussion about this post