নিট ইউজি পরীক্ষা ২০২৪-এ প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে যে মামলা হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে নোটিশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। শুধু কেন্দ্র নয়, সঙ্গে সিবিআই-কেও এই নিয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে দেশ জুড়ে শোরগোলের পর অবশেষে শীর্ষ আদালতে সুর নরম করল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং সন্দীপ মেহতার অবসরকালিন ডিভিশন বেঞ্চে তৃতীয় মোদী সরকার বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিল নিট-এ বাড়তি নম্বর বা গ্রেস মার্কস পাওয়া পরীক্ষার্থীদের নম্বর বাতিল করা হবে। বদলে গ্রেস মার্কস পাওয়া পরীক্ষার্থীদের আরও এক বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে।
সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা বা নিটে একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম স্থান অধিকার করায় দেশ জুড়েই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছিল ব্যাপক দুর্নীতির। সেই সময় নিট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল প্রশ্নপত্র এবং কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রে সময় জনিত সমস্যার জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে। কিন্তু র্যা ঙ্কিং নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্যে আসতেই এই বাড়তি নম্বরের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন মহল। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতেও। সেই মামলাতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। এদিন হলফনামা দিয়ে তৃতীয় মোদী সরকার শীর্ষ আদালতে জানায় ১৫৬৩ জন নিট পরীক্ষার্থীকে দেওয়া বাড়তি নম্বর বাতিল করা হবে। বদলে তাঁদের নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেবে কেন্দ্র। যাঁরা এই পরীক্ষা দিতে চান, তাঁদের আগামী ২৩ জুন এই পরীক্ষা দিতে হবে। কেন্দ্র জানিয়েছে, পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইনজ্ঞদের একাংশের মতে ২০২৪ সালের পুরো নিট পরীক্ষাই যাতে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে না দেয় সেজন্যই শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে সুর নরম করল মোদী সরকার। বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে উল্লসিত, তারা এতে নিজেদের জয় দেখছেন। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা বাতিলের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারীরা অভিযোগ করেন যে এবার নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য অনিয়ম হয়েছে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি নাথ এবং বিচারপতি আমানুল্লার অবকাশকালীন বেঞ্চে। এই আবহে নিটের আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির থেকে জবাব চেয়েছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লার অবকাশকালীন বেঞ্চ। গ্রেস মার্কসের বিষয়ে এনটিএয়ের তরফে দাবি করা হয়, দেশজুড়ে ২৪ লাখ নিট প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়। নিট কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
Discussion about this post