ওপার বাংলায় অশান্তি অব্যাহত। বাংলাদেশ সেনা প্রধান ওয়াকার উজ-জামানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ সেনা সূত্রে খবর, পাকিস্তান ও জামাতের সঙ্গে মিলেই চক্রান্ত করা হয়েছিল। আর এখানে মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন বাংলাদেশের লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমান।বাংলাদেশের সেনাপ্রধান, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জমানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটানোর ষড়যন্ত্র চলছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগের তির কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমানের বিরুদ্ধে। ওয়াকার উজ জামান কে হটিয়ে ফয়জুর রহমান নিজে সেনানায়ক হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ছিলেন। সেই নিয়ে সমর্থন জোগাড়েও নেমে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঠিক সময়ে বিষয়টি ধরে ফেলেন ওয়াকার। ভারতের একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওয়াকারকে সরাতে সেনার শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠকও করেন ফয়জুর। সেই বৈঠকের ব্যাপারে ওয়াকারকে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু ওই বৈঠকে যথেষ্ট সমর্থন জোগাড় করতে পারেননি ফয়জুর। আর তাতেই চক্রান্তের পর্দাফাঁস হয়ে যায়। বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থা DGFI এর নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে ফয়জুরকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সচিবালয়ে গোপন তথ্য আসে যে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমান, যিনি জামাত-ই-ইসলামীর প্রতি সহানুভূতিশীল, কিছু বৈঠক আহ্বান করেছেন সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে। এই বৈঠকগুলো সেনাপ্রধানের অজান্তে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার মাধ্যমে ফয়জুর সেনাপ্রধানকে উৎখাত করার চেষ্টা করছিলেন। তবে তিনি তেমন সমর্থন অর্জন করতে পারেননি। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমান, মার্চের প্রথম সপ্তাহে, সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ গোষ্ঠী কমান্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন। সেনাপ্রধানের সচিবালয় এই বৈঠক সম্পর্কে জেনে যাওয়ার পর, শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠক থেকে সরে যান। চলতি বছর জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে, ফয়জুর জামাত নেতৃবৃন্দ এবং পাকিস্তানি কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই বৈঠকগুলো সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামানের নজরে আসার পর, তিনি ফয়জুরকে নজরদারিতে রাখেন।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন মহম্মদ ইউনূস। গত কয়েকমাসে ক্রমে পাকিস্তানের সঙ্গে সক্ষতা তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের । কোনও নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছাড়াই যে কোনও পাকিস্তানি নাগরিককে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনূস সরকার। এর ফলে ভারতের মাটিতে আইএসআই এবং জামাতের কার্যকলাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বন্ধু দেশগুলিকে নিয়ে পাকিস্তানের নৌবাহিনী ২ বছর অন্তর করাচিতে একটি মহড়ার আয়োজন করে। ‘আমন-২৫’ নামে মার্চের এই মহড়ায় এই প্রথম অংশ নিতে চলেছে বাংলাদেশের নৌবাহিনীও। এই আবহে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মাথা না ঘামালেও সদা সতর্ক রয়েছে দিল্লি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান সব নেতাকে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেছিলেন, এই সময় নেতারা নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি করলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। নেতাদের সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে হবে। বিভাজনের রাজনীতি করলে দেশের সার্বভৌমত্ব সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে। নেতারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করার ফলে দুষ্কৃতীরা সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। তারা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। সেই সঙ্কট থেকে দেশকে বের করতে হবে। পরে তিনি জানান, নেতাদের সাবধান করার পিছনে তাঁর কোনও উচ্চাকাঙ্খা নেই। জাতীয় স্বার্থে এই কাজ করছেন। তাঁর কথায়, ‘আমি শুধু দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চাই। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত শুধু সেনাবাহিনী বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা দেখবে।’
Discussion about this post