ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণের গুটি সাজাচ্ছে বাংলাদেশ!বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় ভারত। এবার সেই বদলা নিতেই ভারতের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের যুদ্ধাভাস। পরম মিত্র পাকিস্তানের মতোই ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে অনুদান আদায় করে সেই অর্থ দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করার পরিকল্পনা বাংলাদেশের।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত সুরক্ষিত করতে চিন থেকে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাশাপাশি ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ও উচ্চ প্রযুক্তির রাডার কিনতে উদ্যোত বাংলাদেশ। সূত্র বলছে, ১৩ মে ঢাকায় চিনা অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয় সংক্রান্ত বিষয় প্রাথমিক কথাবার্তা চালাতে বৈঠকে বসেছিলেন বাংলাদেশ সেনার শীর্ষ পদাধিকারী অফিসাররা। বাংলাদেশ সেনার শীর্ষ পদাধিকারীকদের সঙ্গে এদিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিনা সংস্থা ভ্যানগার্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক। জানা যায় বাংলাদেশ সেনার ওই প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্ত্র শাখার মেজর জেনারেল আবু বকর সিদ্দিক খান।
সূত্রের খবর, চিনা সংস্থা ভ্যানগার্ড থেকে এইচকিউ-১৭এ ই , জেএসজি রাডার এবং এফকে-৩ মডেলের মাঝারি-পাল্লার ভুমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সেনা।
উল্লেখ্য এর আগে চিন সফরে গিয়েই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা সেরে এসেছিলেন বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সময়ে চীনা প্রেসিডেন্ট ওই অস্ত্র কেনার জন্য বাংলাদেশকে ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। চিনা সংস্থা ভ্যানগার্ডের এইচ কিউ -১৭এ ই হল, স্বল্প দুরত্বের ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, এটিকে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম হিসাবেও ব্যবহার করা যায়। রাশিয়ান টর-এম১ প্রযুক্তির অনুকরণে তৈরি এই চিনা ক্ষেপণাস্ত্র , যা যেকোনো প্রতিকূল আবহাওয়ায় ব্যবহারের উপযুক্ত। ১.৫ থেকে ১৫ কিলোমিটার সীমার মধ্যে থাকা ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। তাজিকিস্তান, সার্বিয়া এবং সৌদি আরবের মতো দেশ ইতিমধ্যেই এই আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ক্রয় করে নিজেদের সমরাস্ত্র ভান্ডার সমৃদ্ধ করেছে বলেই জানিয়েছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।
আর অন্যদিকে জিএসজি রাডার যেটি বাংলাদেশ ক্রয় করার পরিকল্পনা করেছে সেটি হল একটি আধা-সক্রিয় রাডার সিস্টেম। দ্রুত মোতায়েনের জন্য এগুলি সাঁজোয়া চাকাযুক্ত বা ট্র্যাক করা যানবাহনে স্থাপন করা যেতে পারে। এফকে-৩ হল একটি মাঝারি-পাল্লার, মোবাইল, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। চিনেরই এইচকিউ -২২ এর রফতানি সংস্করণ। এটি বিমান, হেলিকপ্টার, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইউএভি সহ বিভিন্ন আকাশ হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। একসাথে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
চিনা সংস্থার সঙ্গে স্থল সেনার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য অতিরিক্ত QW-18A ম্যানপাডস কেনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে কেনা QW-18 এর উন্নত সংস্করণ হল QW-18A ম্যানপাডস। যা প্রতি সেকেন্ডে ৩০০ মিটারেরও বেশি গতিতে উড়তে পারে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্ত্র ভাণ্ডারে বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। তার মধ্যে চিনের এফএম-৯০ এবং তুরস্কের রোকেটসান টি আরজি ২৩০ এবং টি আর জি -৩০০ এর মতো একাধিক রকেট লঞ্চার ছাড়াও কিউ ডাব্লু সিরিজের ম্যান-পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম রয়েছে।
প্রসঙ্গত তুরষ্ক পূর্ণ সমর্থন ও চীনের শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র প্রদানের পরও পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না! ভারতের আক্রমণে ছারখার হচ্ছে পাকিস্তান, অথচ তাঁদের একটা আক্রমণও সফল হচ্ছে না! কেন এই হাল পাকিস্তানের? উত্তরটা লুকিয়ে আছে অস্ত্র আমদানিতেই। আসলে পাকিস্তান সিংহভাগ অস্ত্র কেনে চিন থেকে। যা তুলনামূলক সস্তা। তাই চিনা এয়ার ডিফেন্স ভেদ করে ভারত অনায়াসে নির্ভুল আক্রমণ করে চলেছে ভারত। কারণ ভারত অস্ত্র কেনে রাশিয়া, ইজরায়েল, ফ্রান্স ও আমেরিকার মতো দেশ থেকে। আবার ভারতও এখন অস্ত্র তৈরিতে আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে। এখানেই বাজিমাত করছে নয়া দিল্লি। আর ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে ইসলামবাদ। এবার একই পথে হেঁটে বাংলাদেশ যখন চীনের থেকে ক্ষেপণাস্ত্র আমদানিক করে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভাস দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানে, সংঘাতের আগেই বাংলাদেশের পরাজয়ের বিষয়টি কি স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের দরবারে?
Discussion about this post