বিশ্বজুড়ে এখন চাঞ্চল্য ছড়াচ্ছে ইজরায়েল ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতি! এর মাঝেই ঘটে গেল একের পর এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। হামলা চালাতে পারে ইরান ফলে রাতারাতি কাতারের সেনা ঘাটি থেকে উধাও ৪০টি মার্কিন যুদ্ধবিমান। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্লাসটার বোমা ব্যবহার করেছে ইরান, এই বোমা কতটা ভয়াবহ তা নিয়ে জল্পনা ছড়াচ্ছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু এর পালটা হামলা কি ইরানে চালানো হবে এ বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের ঘোষণার পরেই ইরান কে ধ্বংসের হুঁশিয়ারি বেঞ্জামিন নীতিন ইয়াহু-র। পাশাপাশি এই যুদ্ধের আবহেই অপারেশন সিন্ধু শুরু করেছে ভারত সরকার।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকায়, ইরান থেকে ভারতীয় নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারত সরকার এটি চালু করেছিল, যেটি ভারতের অপারেশন সিন্ধু নামে পরিচিত।
ইরানে বর্তমানে ১০,০০০ এরও বেশি ভারতীয় রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৬,০০০ শিক্ষার্থী রয়েছে।অভিযানের প্রথম পর্যায়ে , ইরান ও আর্মেনিয়ায় ভারতীয় মিশনের তত্ত্বাবধানে উত্তর ইরান থেকে ১১০ জন ভারতীয় ছাত্রকে সফলভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সড়কপথে আর্মেনিয়ার ইয়েরেভানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তেহরানের ভারতীয় দূতাবাস, আর্মেনিয়ায় অবস্থিত মিশনের সাথে, ইরানের উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে নাগরিকদের নিরাপদ অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে স্থানান্তরিত করছে করছে ভারত সরকার।
আবার, সাম্প্রতিককালে ইজরায়েল ইরান যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই দেশই তবে, হতাহতের সংখ্যা এবং ধ্বংসের পরিমাণ কিছুটা বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে ইরানে। তবে ইরান ভয়ংকর হামলা চালাতে শুরু করেছে ইজরাইলকে লক্ষ্য করে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকা! আর এই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সেনা ঘাটি। ইরান হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কায় এবার কাতারের আল উদেইদ বায়ুসেনা ঘাঁটি খালি করল মার্কিন সেনা। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, গত দুই সপ্তাহে এই বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত ৪০টি মার্কিন যুদ্ধবিমান। চলতি মাসের শুরুতেই অর্থাৎ গত ৫ জুন থেকে ১৯ জুন এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিমানগুলি সরিয়ে নেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্রের খবর, ওই সেনা ঘাঁটি থেকে সরানো হয়েছে বিমানে জ্বালানি ভরার জন্য ব্যবহৃত ২৭টি কেসি ৪৬এ পেগাসাস বিমান ও কেসি-১৩৫ স্ট্রেটোট্যাঙ্কারস বিমান। এগুলি ১৫ থেকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ইউরোপে রওনা দিয়েছে। যার মধ্যে ২৫টি বিমান কাতারে ফেরেনি।
উল্লেখ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ইরান যদি আমেরিকার উপর হামলা চালায় তবে ইরানকে কড়া জবাব দেওয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার কাতারের মার্কিন দূতাবাসের তরফে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিজেদের সেনা ঘাঁটির সমস্ত কর্মীদের সতর্ক থাকতেও বলা হয়।
এর মাঝেই ইরানের বিরুদ্ধে উঠে এলো এক ভয়ংকর অভিযোগ। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করল ইরান। এই ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ করার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে এই যুদ্ধাস্ত্রটি এতটাই ভয়ংকর যার ফলেই বিশ্বের ১২০টি দেশ এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। অর্থাৎ এটি ধ্বংসাত্মক একটি হাতিয়ার। জানা যায়, ক্লাস্টার বোমা ফেটে গিয়ে আরও অনেক ছোট ছোট বোমা সৃষ্টি করে বিরাট এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটায় এলাকাটির ধ্বংস করে দেয়। বোমারু বিমান বা মাটি থেকেও এই বোমা নিক্ষেপ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নয়, বড় অঞ্চল নিশানায় থাকে। ফলে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা খুব বেশি। তাই এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে ‘কনভেনশন অফ ক্লাস্টার মিউনিশনস’ আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও ইজরায়েল, ইরান, আমেরিকা এই চুক্তিতে অংশ গ্রহণ করেনি। অর্থাৎ এই বোমা ব্যবহার করে কি তবে ইরান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করলো ? উঠছে প্রশ্ন আন্তর্জাতিক স্তরে। ফলে যত সময় যাচ্ছে তত যেন ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধএক ভয়ংকর আকার ধারণ করছে। ১২০টি দেশে ‘নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করছে । ফলে এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Discussion about this post