একজন একদা ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব এবং রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। অন্যজন উত্তর ২৪ পরগণা জেলা তৃণমূলের সভাপতি এবং রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। দুজনেরই বর্তমান ঠাঁই প্রেসিডেন্সি সংশোধানাগারের পহেলা বাইশ সেল। প্রথমজন হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং দ্বিতীয়জন হলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দুজনেই একসময়ে তৃণমূলের দাপুটে নেতা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এবং জ্যোতিপ্রিয় রেশন দুর্নীতিতে জেলবন্দি দীর্ঘদিন ধরেই। ফলে রাজ্যে লোকসভা ভোট চললেও তাঁরা ভোটের আবহ থেকে বহু দূরে প্রেসিডেন্সি জেলের কারাগারের অন্তরালে দিনযাপণ করছেন। কিন্তু তাঁরা কি ভোটের খোঁজখবর নিচ্ছেন? রাজ্যে ইতিমঘ্যেই শেষ হয়েছে পাঁচ দফার ভোট। ভোটের দিনগুলিতে কি করছেন তৃণমূলের দুই হাইপ্রোফাইল জেলবন্দি নেতা?
প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, কারাগারে দুই নেতাই শুয়ে-বসে দিন কাটান। কখনও সখনও জেলের লাইব্রেরি থেকে বই আনিয়ে পড়েন। ভোটের দিনগুলিতেও ছিল একই নিরাবতা। গোটা রাজ্য যখন ভোটের উত্তাপে পুড়ছে, তখন প্রেসিডেন্সি জেলের পহেলা বাইশ সেলের ভিতর শীতলতা। কারণ ভোটের খবর নিয়ে পার্থ বা জ্যোতিপ্রিয় কেউই কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অর্থাৎ ভোট নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যাথা নেই। গত সোমবার পঞ্চম দফায় ভোট হয়েছে ব্যারাকপুর ও বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে। প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর, একদা উত্তর ২৪ পরগণা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওই দিন সেলের বাইরে এসে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেছেন। কিন্তু জেলের টিভির আশেপাশে যাননি। অপরদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সোমবার দেখা করতে এসেছিলেন এক আত্মীয়। তিনি বেশ কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলে ফের সেলে চলে আসেন।
প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতর কয়েদিদের জন্য টিভি রয়েছে। সেখানে চাইলে খবরের চ্যানেল চালানো যায়। আবার ভিভিআইপিদের জন্য পহেলা বাইশ সেলের বন্দিরা চাইলে আলাদা টিভির ব্যবস্থা করার নিয়ম আছে। এই সেলে বন্দি কোনও অভিযুক্ত চাইলেই জেল কর্তৃপক্ষ আলাদা করে টিভির বন্দোবস্ত করা হতো। কিন্তু এই সেলের ভিতর থাকা তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা মানিক ভট্টাচার্যরা কেউই টিভি দেখার আবদার করেননি। ফলে রাজ্যে যেখানে লোকসভা ভোট চলছে, সেখানে হেভিওয়েট প্রাক্তন তৃণমূল নেতারা ভোটের উত্তাপ থেকে বহু দূরে থাকতে চাইছেন। এ কথা ধরে নেওয়াই যায়।
Discussion about this post