বর্তমানে ভারতে দুটি কর কাঠামো রয়েছে। নতুন কর ব্যবস্থায় বার্ষিক ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড় দেওয়া হয়। আর পুরোনো কর ব্যবস্থায় বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ছাড় রয়েছে। আপনি যদি এই দুটি স্তরের থেকে বেশি আয় করেন, তাহলে আপনাকে দিতে হবে আয়কর। তবে আয়করে ছাড় পেতে অনেকেই নানান ধরণের বিনিয়োগ করেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করেও বছর শেষে আয়কর দিতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত মানুষ আয়কর ছাড়ের জন্য বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে কয়েকটি ভুল করেন। এরমধ্যে অন্যতম ভুল হল, আর্থিক বছরের শেষদিকে এসে বিনিয়োগ করা। আর এতেই টাকা বিনিয়োগ করা সত্বেও আয়কর ছাড় পাওয়া যায় না অনেক সময়। ফলে এই ধরণের বিনিয়োগ করা উচিৎ আর্থিক বছরের শুরুর দিকেই। আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক ঠিক কোন কোন পরিস্থিতিতে আপনি বছরে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয় করেও আয়করে ছাড় পেতে পারেন।
আপনি যদি বছরে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি আয় করেন, তবে আপনাকে বেছে নিতে হবে পুরোনো কর ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার অধীনে বেশ কয়েকটি ট্যাক্স স্লাব রয়েছে। ভারতের আয়কর বিধি বলছে, পুরোনো আয়কর ব্যবস্থায় বছরে আড়াই লক্ষ টাকা রোজগারে কোনও কর দিতে হবে না। এরপর আড়াই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা বার্ষিক আয়ে কর দিতে হবে ৫ শতাংশ। ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা বার্ষিক আয়ের ক্ষেত্রে কর দিতে হবে ২০ শতাংশ হারে। আর ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে আয়কর জমা করতে হবে ৩০ শতাংশ।
এবার বলি যদি আপনার বার্ষিক আয় ১০ লক্ষ টাকার অধিক হয় তবে নিয়ম মেনে আপনাকে ৩০ শতাংশ হারেই আয়কর দিতে হবে। কিন্তু আপনি সঠিকভাবে কিছু বিনিয়োগ করলে আপনাকে এক টাকাও ট্যাক্স দিতে হবে না। সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন হিসেবে এমনিতেই ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। ফলে পরবর্তী সাড়ে নয় লক্ষ টাকার ওপর দিতে হবে আয়কর। এবার হিসেব করে আর্থিক বছরের শুরুর দিকেই বিনিয়োগ করা শুরু করুন। এক্ষেত্রে আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় PPF, EPF, NSC, ELSS-এর মতো সরকারি স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স বাঁচাতে পারবেন। এবার আপনি যদি ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে (NPS) ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেন তবে ৮০সিসিডি ধারায় অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা কর ছাড় পাবেন। ফলে এবার আপনার বাকি সাড়ে সাত লক্ষ টাকার ওপরই কর ধার্য করবে আয়কর বিভাগ।
এবার যদি আপনার কোনও হোম লোন চলে, তবে আয়কর আইনের ২৪বি ধারা অনুযায়ী বছরে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড় পাবেন। ফলে সাড়ে সাত লক্ষ থেকে ২ লক্ষ বিয়োগ করলে দাঁড়ায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। এবার যে কোনও ট্যাক্স সেভিংস স্কিমে আপনি ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করুন। তখনই আপনার স্ল্যাব নেমে আসবে ৫ লক্ষ টাকার নীচে। তখন আপনি বছরে ১০ লক্ষ টাকা আয় করেও পুরোনো কর ব্যবস্থার অধীনে ৫ লক্ষ টাকার স্লাবে কোনও আয়কর দিতে হবে না। তবে মাথায় রাখবেন, এই সব বিনিয়োগই আপনাকে করতে হবে আর্থিক বছরের শুরু দিকে।
Discussion about this post