হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলার পিনি গ্রাম। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এই গ্রামটির আশেপাশে রয়েছে যেমন আদিম পরিবেশ, তেমনই আদিম প্রথা পালন করেন পিনি গ্রামের বাসিন্দারা। বিশেষ করে পিনি গ্রামের মহিলাদের পালন করতে হয় এক অদ্ভুত প্রথা, যার উদাহরণ ভূ-ভারতে দ্বিতীয় নেই। কি সেই প্রথা? জানলে অবাক হবেন, হিমাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত এই গ্রামের মহিলারা বছরের পাঁচটি নির্দিষ্ট দিনে কোনও জামাকাপড় পড়েন না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় থাকতে হয় ওই পাঁচদিন। আর ওই পাঁচদিন গ্রামের পুরুষদেরও পালন করতে কঠোর নিয়ম।
পিনি গ্রামের মহিলারা যুগের পর যুগ ধরে এক আদিম প্রথা মেনে চলেন স্ব-ইচ্ছায়। তাঁরা বছরের পাঁচদিন কোনও কাপড় পড়েন না। যা নিয়ে বহির্বিশ্বে সৃষ্টি হয়েছে অপার কৌতুহল। কেন তাঁরা ওই পাঁচদিন কোনও কাপড় পড়েন না। কোন পাঁচদিন এই প্রথা মেনে চলতে হয়, আসুন জানা যাক বিস্তারিত।
এই ঐতিহ্যের পিছনে অন্যতম কারণ হল স্থানীয় এক দেবতার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা প্রদর্শন। হিমাচলের পিনি গ্রামের মহিলারা বিশ্বাস করেন বহু শতাব্দী আগে এই গ্রামেই বাস করত এক রাক্ষস। যে সুন্দর পোশাক পড়া মহিলাদের তুলে নিয়ে যেত। এরপর লহুয়া নামে এক স্থানীয় দেবতা ওই রাক্ষসকে বধ করে মহিলাদের সম্মান বাঁচান। এরপর থেকেই ওই দেবতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান জানাতে বছরের পাঁচদিন কোনও পোশাক পড়েন না। তাঁরা শুধু পুজো করা ছাড়া ঘরের বাইরে বার হন না। স্বামী বা অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না। এই সময় গ্রামের বাইরের পুরুষদের মানতে হয় কঠোর নিয়ম। তাঁরা এই পাঁচদিন কোনও ধরণের মাদক গ্রহন করতে পারেন না। মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে পারেন না। ফলে এই আদিম প্রথা খুব নিষ্ঠার সঙ্গেই পালিত হয় হিমাচল প্রদেশের পিনি গ্রামে।
মূলত শ্রাবণ মাসের পাঁচদিন পিনি গ্রামের মহিলারা পোশাকহীন হয়ে থাকেন। তাঁদের বিশ্বাস, প্রকৃতির সঙ্গে গভীরভাবে মিশে থাকার অনুভূতিই এই প্রথার মূল মন্ত্র। বাতাস, সূর্যের আলো, বৃষ্টির জল সরাসরি তাঁরা শরীরে ধারণ করতে পারেন। এই পাঁচদিন পোশাকহীন থেকেই পিনি গ্রামের মহিলাদের শুধু পুজো-অর্চনা, তপস্যা করতে হয়। পুরুষদের সঙ্গে কোনও রকম কথাবার্তা, সহবাস করাও নিষেধ এই পাঁচদিন। অর্থাৎ, এই পাঁচদিন মহিলারা শুধুই নিজের নারীত্বকে উদযাপণ করেন। তবে এই সময়টিতে পিনি গ্রামের বাইরের বাসিন্দাদের গ্রামে প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ফলে অন্যান্য রাজ্য বা বিদেশীদের মধ্যে এই প্রথা নিয়ে কৌতুহল থাকলেও কেউ অংশ নিতে পারেন না পিনি গ্রামের অদ্ভুত উৎসবে।
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার। বড়োসড় সামরিক মহড়া ভারতের। তাও আবার একই জায়গায়। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরাও মনে করতে পারছেন না, শেষ কবে...
Read more
Discussion about this post