বেঙ্গালুরুর বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত ধৃতদের সাম্প্রতিক ঠিকানা ছিল বাংলা। আর এই ঘটনায় ভোটের মুখে বাংলার জঙ্গি যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। পাল্টা পুলিশমন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর জবাব ২ ঘণ্টার মধ্যে বাংলার পুলিশ জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে।
গত ১ লা মার্চ বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ৩ রা মার্চ বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। সন্দেহভাজনদের খুঁজে পেতে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এবার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হল বাংলা থেকেই। এই প্রথম নয়। আগেও একাধিকবার বাংলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সন্ত্রাসমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত জঙ্গিদের।
একবার দেখে নেব সেই তালিকা বাংলার জঙ্গি যোগ
২০১৬- বর্ধমান স্টেশন থেকে আইএস জঙ্গি মহম্মদ মুসা গ্রেফতার
২০১৭- কলকাতা থেকে AQIS এর ২ সদস্য গ্রেফতার
২০১৯- শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশন থেকে ৪ জেএমবি জঙ্গি গ্রেফতার
২০২০, মার্চ- বসিরহাট থেকে লস্কর জঙ্গি তানিয়া পারভিন গ্রেফতার
২০২০, জুলাই- হুগলি থেকে গ্রেফতার জেএমবি জঙ্গি আয়েশা জন্নত
২০২০, সেপ্টেম্বর- মুর্শিদাবাদ থেকে আলকায়দা সদস্য শামিম আনসারি গ্রেফতার
২০২১, জুলাই- হরিদেবপুর থেকে ৩ জেএমবি জঙ্গি গ্রেফতার
২০২২, নভেম্বর- দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার আলকায়দা জঙ্গি মনিরুদ্দিন খান
২০২৩, জানুয়ারি- হাওড়া থেকে ২ আইএস জঙ্গি গ্রেফতার
উপরিউক্ত তালিকাটা অনেকটাই লম্বা। এবার এরসঙ্গে সংযোগ হল আরও ২ জঙ্গির নাম। আবদুল মথিন আহমেদ ত্বহা ও মুসাভির হুসেন সাজিব, এই দুই জঙ্গিকে পাকড়াও করতে এনআইএ টিম যখন কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং উত্তরপ্রদেশ—এই তিন রাজ্যের ১৮টি জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছিল তখন বাংলার একাধিক হোটেলে গা ঢাকা দিয়ে লুকিয়েছিল তারা। সূত্রের খবর তামিলনাডুর ২ ব্যক্তির ভুয়ো পরিচয় পত্র ব্যবহার করায় অভিযুক্তদের নাগাল পেতে বার বার সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল এনআইএকে। কার্যত এই ঘটনার পর বাংলাকে জঙ্গিদের নিশ্চিত আশ্রয়স্থল বলে প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিজেপি।
পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের জনসভা থেকে তিনি দাবি করেন মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে জঙ্গিদের ধরে দিয়েছে বাংলার পুলিশ।
স্বাভাবিকভাবে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ মানতে চাননি পুলিশমন্ত্রী মমতা। বিরোধীরা যাই দাবি করুন না কেন তিনি বার বার রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে বাংলা থেকে জঙ্গিদের গ্রেফতারির পরিসংখ্যান কিন্তু প্রশ্ন তুলছেই। কেন বাংলার ঠিকানায় নিশ্চিত আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে জঙ্গিরা। তবে কি পুলিশি নজরদারির অভাব রয়েছে? বিগত পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে এই প্রশ্নগুলি কোনভাবেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এদিকে বিরোধীদের দাবি বাংলার পুলিশ এখন পার্টির ক্যাডারার। নিজেদের কাজে নয় পার্টির কাজেই তাদের মনোযোগ এখন বেশী।
Discussion about this post