সন্দেশখালি কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। সোমবার সেই মামলার শুনানি হল বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির শেষে মামলাটি আপাতত মুলতুবি রাখলেও হাইকোর্টের রায়ে কোনও হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। অর্থাৎ সিবিআই তদন্তে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার পরবর্তী শুনানি গ্রীষ্ণকালীন ছুটির পর সেই জুলাই মাসে।
সন্দেশখালিকে মহিলাদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ এবং জোর করে জমি দখলের নানা অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তদন্তও শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি সন্দেশখালি থেকে বিপুল পরিমান বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেই অভিযানে সামিল হলেছিল ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড বা এনএসজি-র কমান্ডোরা। তবে এই তল্লাশি অভিযান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছিলেন লোকসভা ভোটের মুখে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি দিয়ে এই অভিযান চালানো হয়েছে তৃণমূলকে বদনাম করার জন্য। আগেই সিবিআই তদন্তের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের পাশাপাশি শীর্ষ আদালতে একই আবেদন করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং বসিরহাট জেলা পুলিশ সুপার। এদিন সব আবেদনের শুনানি একসঙ্গে হয়। রাজ্যের হয়ে সাওয়াল করেন অভিষেক মনু সিংভি। তিনি সাওয়ালে বলেন, এই মামলায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও তথ্য রাজ্যের হাতে এসেছে। ফলে মামলাটি ২ থেকে ৩ সপ্তাহের জন্য মুলতুবি করা হোক। এই সাওয়ালের বিরোধিতা করেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা এবং অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল এসভি রাজু। তাঁদের দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে হাতিয়ার করে হাইকোর্টের মামলা প্রভাবিত করা হতে পারে। শুনানি শেষে, দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেন, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকলেও কোনওভাবেই হাইকোর্টের নির্দেশ বা শুনানির ক্ষেত্রে হাতিয়ার করা যাবে না। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত চালিয়ে যেতে কোনও বাঁধা রইল না। বলা চলে সন্দেশখালি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আপাতত কোনও স্বস্তি মিলল না রাজ্য সরকারের।
Discussion about this post