নিজস্ব প্রতিনিধি: সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বুধবার জাঁকজমক ভাবে উদযাপন হয়েছে রামনবমী। অতীতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় রামনবমীর মিছিল ঘিরে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল। এ বারে রামনবমীর মিছিল ঘিরে যাতে কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটে সেই কারণে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বিজেপির দুই লোকসভা প্রার্থীকে দেখা গেল তলোয়ার নিয়ে রামনবমীর শোভাযাত্রায় যোগ দিতে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যে প্রার্থীদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে, তাঁরা হলেন বীরভূম লোকসভার বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ ধর এবং অন্যজন হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী।
বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন পুলিশ কর্তা দেবাশীষ ধর এদিন রামপুরহাটে রামনবমীর মিছিলে অস্ত্র হাতে হাঁটেন। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখানোয় শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিরোধীরা তাঁকে নিশানা করেছেন। এদিকে বুধবার হাওড়ায় বিজেপি ও বেশ কিছু সংগঠনের উদ্যোগে রামনবমীর মিছিল আয়োজিত হয়। রামরাজতলা রামমন্দির পর্যন্ত শোভাযাত্রা হয়। সেই মিছিলেও অস্ত্র হাতে দেখা যায় হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীকে। যদিও অস্ত্র হাতে সেই মিছিল নিয়ে বিজেপি প্রার্থীর সাফাই ‘মা দুর্গাকে অস্ত্র দিয়ে পুজো করা হয়। এটা কাউকে শাসানোর ও ভয় দেখানো জন্য নয়।’ অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন আদালতের নির্দেশ কীভাবে অমান্য করলেন বিজেপি প্রার্থী? তাঁর দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন কেউ কেউ। ভোটের আগে ভয়ের পরিবেশ তৈরী করতে চাইছেন কি তিনি? এই প্রশ্নও উঠছে। অন্যদিকে রামনবমীর মিছিলে অস্ত্রের প্রদর্শনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া নিয়ে সুকান্তের সাফাই, ‘নিজের ধর্ম রক্ষার জন্য হিংসার পথ গ্রহণ করা যায়।’ বুধবার বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের ইটাহারে রামনবমীর মিছিল করেন সুকান্ত মজুমদার। সেই মিছিলে তিনি হাঁটেন।
প্রসঙ্গত আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, ‘ রামনবমীর মিছিলে অস্ত্র এবং ডিজে ব্যবহার করা যাবে না।’ শুধু তাই নয়, মিছিল থেকে কোনও উসকানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেবাশীষ ও রথীনরা নিজেদের কান্ডজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিলেন না শুধু, দলকেও বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Discussion about this post