রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ বায়ুসেনার এক হেলিকপ্টারে প্রথমে তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় পৌঁছন। এরপর সেনা পণ্যবাহী বিমানে আগরতলা থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেসে। রবিবার বিকেল থেকে তিনি সেখানেই আছেন বলে জানা যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, শেখ হাসিনা কোথায় যাচ্ছেন। জানা গিয়েছিল তিনি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন। কিন্তু ব্রিটেনের তরফে এখনও কোনও সদর্থক সাড়া মেলেনি। ফলে আপাতত তিনি ভারতেই নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আপাতত কয়েকদিন সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি, সেটা ভারত সরকারকে জানাবেন তিনি। এই সিদ্ধান্তের জন্য তিনি সময় নিচ্ছেন। শেখ হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ভারত সরকার।
বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে যে বিমানটি গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেসে নামে সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ সেটি উড়ে যায়। সংবাদসংস্থা এএনআই জানায়, বিমানটি উড়ে গেলেও তাতে শেখ হাসিনা আছেন কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। ফলে সকলের নজর ঘুরে যায় ওই বিমানের দিকে। পরে সংবাদ সংস্থা জানিয়ে দেয়, বায়ুসেনার ওই পণ্যবাহী বিমানে শেখ হাসিনা উঠেননি। বরং যে ৭জন বাংলাদেশী সেনাসদস্য এসেছিলেন হাসিনার সঙ্গে তাঁদের নিয়েই বিমানটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। ফলে হাসিনা যে আপাতত ভারতের আশ্রয়েই থাকছেন সেটা পরিস্কার হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন উঠছে, শেখ হাসিনার পরব্র্তী গন্তব্য কোথায়?
সূত্রের খবর, প্রাথমিক ব্রিটেনেই আশ্রয় চাইছেন শেখ হাসিনা। এই বিষয়ে তাঁকে সাহায্য করতে পারেন হাসিনার বোন রেহানা। তিনিও বাংলাদেশ থেকে হাসিনার হেলিকপ্টারে পালিয়ে আসেন ভারতে। বর্তমানে তিনি হাসিনার সঙ্গেই আছেন, নাকি অন্য কোনও গন্তব্যে রয়েছেন সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। তবে শেখ রেহানা বর্তমানে ব্রিটেনের নাগরিক। এবং তাঁর মেয়ে তথা শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকি বর্তমানে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির সাংসদ। শুধু তাই নয়, টিউলিপ এখন যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি মিনিস্টার পদে রয়েছেন। ফলে তিনি যে মাসির জন্য ব্রিটেন সরকারের কাছে জোরদার দরবার করবেন সে কথা বলাই বাহুল্য। শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কর্মসূত্রে এখন দিল্লিতে থাকেন। হাসিনা চাইলে মেয়ের কাছেও থাকতে পারেন, তবে তা নির্ভর করছে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর। আরেক সূত্র দাবি করছে, শেখ হাসিনা কূটনৈতিক চ্যানেলে ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হতে চলেছে, সেটা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
Discussion about this post